নিজস্ব প্রতিবেদক
২৪ অক্টোবর ২০২২, ০৮:৩১ পিএম
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের মূল কেন্দ্র পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এছাড়া কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এটি ২৪০ কিলোমিটার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদফতরের ১০ নম্বর বিশেষ সতর্কবার্তায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। যা আরও ঘনীভূত ও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ মধ্যরাত অথবা আগামীকাল ভোররাত নাগাদ ভোলার নিকট দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে।
এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
এই আবহাওয়াবিদ আরও জানান, ইতোমধ্যেই মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। সেই সঙ্গে এসব এলাকায় ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮৮ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এদিকে, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার স্থলে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম ও এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। সেই সঙ্গে এসব এলাকায় ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮৮ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
অন্যদিকে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। সেই সঙ্গে এসব এলাকায় ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় সর্ব্বোচ্চ ৭৫ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এছাড়া সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফরিদপুর, ঢাকা, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর নৌ-বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড় ইতোমধ্যেই দেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৮ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এ জন্য ইতোমধ্যেই উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
টিএই/আইএইচ