নিজস্ব প্রতিবেদক
২৪ অক্টোবর ২০২২, ০২:৩১ পিএম
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন বন্ধ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে পুরো ভোলা অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) ভোলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালীদুল ইসলাম খান ঢাকা মেইলকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত পুরো ভোলা অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখেছি। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে পুরো অঞ্চলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
এদিকে দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) পরিচালক (জনসংযোগ) শমিম হাসান। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে এখন পর্যন্ত আমরা কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করিনি। তবে সাধারণত ঝড় বা কোনো দুর্যোগ এলে আমরা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করি। সেক্ষেত্রে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সারাদেশেই দুর্যোপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে রাজধানীসহ দেশের অনেক অঞ্চলে। দেশের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় সর্বোচ্চ ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালীতে ৫৫, ভোলায় ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে সংস্থাটি।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব পড়তে পারে নদ-নদীগুলোতেও। এর ফলে আকস্মিক বন্যার শঙ্কার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ২৫-২৬ অক্টোবর দেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এতে দেশের পূর্বাঞ্চলের মুহুরী, গোমতী ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মনু, খোয়াই, সুরমা-কুশিয়ারা নদ-নদীসমূহের পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সময় বিশেষে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূইয়া জানিয়েছেন, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে আগামী ২৫-২৬ অক্টোবর দেশের উপকূলীয় অঞ্চল সহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ সংঘটিত হতে পারে। এই সময়ে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য অববাহিকার কিছু স্থানে আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এই সময়ে দেশের পূর্বাঞ্চলের মুহুরী, গোমতী ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মনু, খোয়াই, সুরমা-কুশিয়ারা নদ-নদীসমূহের পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সময় বিশেষে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
টিএই/জেবি