images

জাতীয়

তামাক কোম্পানির স্বার্থ ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন পরস্পরবিরোধী

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ অক্টোবর ২০২২, ১১:০০ এএম

তামাকজাত পণ্যের করবৃদ্ধি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে মূল প্রতিবন্ধকতা তামাক কোম্পানিতে সরকারের বিদ্যমান শেয়ার। কোম্পানিগুলো কর্তৃক বহুল প্রচারিত মিথ্যাচার ও তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের উদ্যোগে ‘তামাক কর ও কোম্পানির হস্তক্ষেপ’ শীর্ষক একটি ওয়েবিনার আয়োজকরা এসব কথা বলেন।

সভায় উপস্থিত আলোচকরা বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রধান প্রতিবন্ধকতা তামাক কোম্পানিতে সরকারের বিদ্যমান অংশীদারিত্ব। সিগারেটসহ সকল ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য যেমন: জর্দা, গুলের ওপর সুনির্দিষ্ট কর আরোপ রাজস্ব আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

বক্তারা বলেন, অতি সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের খসড়া প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বহুজাতিক তামাক কোম্পানি। জনস্বাস্থ্যের কল্যাণ ও তামাক কোম্পানির ব্যবসায়িক স্বার্থ সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী। তামাক কোম্পানির বহুল প্রচারিত মিথ্যাচার ‘তামাকের ওপর কর বাড়ালে সরকারের রাজস্ব আয় কমে যাবে’।

আয়োজকরা বলেন, তামাকজাত দ্রব্য থেকে অর্জিত রাজস্বের পরিমাণ তামাকের কারণে সৃষ্ট রোগের চিকিৎসা ব্যয় অপেক্ষা অনেক কম। সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে হস্তক্ষেপের মাধ্যমেই তামাক কোম্পানিগুলো তাদের এ অবৈধ ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে চায়। সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রণালয়ে কোম্পানি কর্তৃক অবৈধ হস্তক্ষেপের ফলে বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের নিরন্তর দাবি সত্ত্বেও তা আলোর মুখ দেখতে পারছে না।

এছাড়া সভায় উপস্থিত বক্তারা তামাককে একটি নেশাজাতীয় দ্রব্য হিসেবে অভিহিত করেন। সচেতনতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জরুরি নীতি প্রণয়ন, সংস্কার ও বাস্তবায়ন প্রয়োজন। পরিশেষে বক্তারা তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ করতে সরকারের আইন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করার প্রতি জোর দাবি জানান।

ওয়েবিনারে উপস্থিত ছিলেন, দি ইউনিয়নের (যুগ্ম সচিব-অনলিয়েন) কনসালটেন্ট মো. ফাহিমুল ইসলাম, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজির কান্ট্রি ম্যানেজার (বাংলাদেশ) নাসির উদ্দীন শেখ, বিএনটিটিপি’র তামাক করবিষয়ক গবেষক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যুরো অফ ইকোনোমিক রিসার্চের প্রকল্প কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল। 

ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য।

ওয়েবিনার আয়োজনে ছিলেন, প্রত্যাশা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা, থ্রি স্টার অর্গানাইজেশন, ডেভেলপমেন্ট ফর ডিজঅ্যাডভান্টেজ পিপল (ডিডিপি), ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট সেন্টার  (ভিডিসি), সততা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, সেবা, টিপিডিও, সুবাহ সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা (এসপিইউএস), এসো জীবন গড়ি, চাঁদপুর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (সিসিডিএস), মমতা পল্লী উন্নয়ন সংস্থা, ডাস-বাংলাদেশ, সবুজবাংলা গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থা, কেরাণীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, পিপলস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটিসহ (পিডিএস) এবং তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যরত আরও বেশ কয়েকটি সংগঠনের কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

ডিএইচডি/এইউ