images

জাতীয়

বিলাসী ব্যয়ে ভূগর্ভে এসটিএস স্থাপনে আগ্রহী ডিএনসিসি

দেলাওয়ার হোসাইন দোলন

১৪ অক্টোবর ২০২২, ১০:৫৬ এএম

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) আওতাধীন হাজারীবাগ ও মেরাদিয়ায় মোটা অংকের টাকা খরচ করে নির্মাণ করা হয়েছিল ভূগর্ভে বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র বা সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস)। কারিগরি জটিলতায় যা ব্যবহার করা যায়নি। এমন বাস্তবতায় বিলাসী ব্যয়ে ডিএসসিসির ব্যর্থতার পর এবার ভূগর্ভস্থ বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র স্থাপনে প্রকল্প হাতে নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। 

ব্যতিক্রমধর্মী এমন প্রকল্প হাতে নেওয়ার পেছনে জায়গা সংকট বলা হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। মাটির নিচে হওয়ায় (ভূগর্ভে বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের) প্রয়োজন হবে প্রশস্ত সংযোগ সড়ক। মাটির নিচে এবং উপরে দখলে যাবে। একই সাথে প্রয়োজন হবে নিরবিচ্ছিন্ন বিদুৎ ও জেনারেটর সুবিধার। বিদুৎ না থাকলে স্থবির হয়ে পড়বে পুরো প্রক্রিয়া। নির্মাণ ব্যয়ও মাটির উপরে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) চেয়ে সাড়ে ছয় গুণেরও বেশি। রক্ষণাবেক্ষণেও বাড়বে ব্যয়।

ets

অন্যদিকে দেশে বিদুৎ সংকটে জনজীননে বেড়েছে অসন্তোষ। বেড়েছে লাগমহীন জ্বালানি তেলের দাম। ঘোষণা দিয়েও সরাকার নির্ধারিত সময়ে কমিয়ে আনতে পারেনি লোডশেডিং। রাজধানীর অভিজাত এলাকায়ও থাকছে না বিদ্যুৎ। স্থান বেঁধে ২-৬ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে হয় লোডশেডিং-এ। গ্রামের চিত্র আরও ভয়াবহ। ঠিক তখনই বিদ্যুৎ শক্তি নির্ভর এসটিএস নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। 

সিটি করপোরেশন বলছে, নগরবাসী বর্জ্য সংকট সমাধান চাইলেও বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র (এসটিএস) নির্মাণে আপত্তি তুলে থাকেন। এসটিএস নির্মাণ করতে গিয়ে বারংবার নগরীর বাসিন্দাদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমাও হয়েছে। জায়গা না পেয়ে অনেক কেন্দ্র রাস্তার ওপর নির্মাণ করা হয়েছে। যে কারণেই ভূগর্ভে বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র বা সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন স্থাপন করতে চায় ডিএনসিসি। সেই সাথে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে হওয়া এসটিএস এ কারিগরি সমস্যা মাথায় রেখেই কাজ করা হবে বলছে সংস্থাটি।

dncc

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) থেকে পাওয়া তথ্য মতে, পাইলট প্রকল্প হিসেবে তিনটি জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে। আগারগাঁও বিজ্ঞান জাদুঘর-সংলগ্ন রাস্তা, মিরপুর ৬০ ফিট রোড ও বারিধারা কূটনৈতিক এলাকা- এর মধ্য রয়েছে।

এসটিএস নির্মাণে খরচ নিয়ে জানা যায়, মাটির উপরে বর্তমানে থাকা এসটিএস নির্মাণে খরচ হয়ে থাকে ৪৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা। অন্যদিকে ভূগর্ভস্থ বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র স্থাপনে খরচ হবে প্রতিটিতে সাত কোটি টাকা।

বর্জ্য স্থানান্তর প্রক্রিয়া নিয়ে জানা যায়, ভূগর্ভে বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রে বাসা-বাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করে একটি জায়গায় ফেলার পর সেগুলো  স্বয়ংক্রিয়ভাবে বক্স কনটেইনার চলে আসবে। পরে সেগুলো কমপ্যাক্ট করা হয়। তারপর বক্স কনটেইনারগুলো স্কেলের সাহায্যে গাড়িতে ওঠানো হয়। সেখান থেকে নির্ধারিত ল্যান্ডফিল্ডে নিয়ে যাওয়া হবে।

dncc

ভূগর্ভে বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র বা সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ প্রসঙ্গ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা এস এম শরীফ-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাংলাদেশ মেশিন ট্যুলস ফ্যাক্টরি এ বিষয়ে কাজ করছে। একটি নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। তবে এখনো এটা অনুমোদিত হয়নি।

তিনি আরও বলেন, বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র করার জন্য কেউ জায়গা দিতে চায় না। আমরা বেশ কয়েকটি জায়গায় বাধার সম্মুখীন হয়েছি। তাই আমরা চাচ্ছি এটা একেবারে ভূগর্ভে নিয়ে যেতে, যাতে কেউ দুর্গন্ধ না পায়। 

ডিএইচডি/এএস