images

জাতীয়

কোরবানির বর্জ্য অপসারণে এগিয়ে উত্তর সিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ জুলাই ২০২২, ০৩:৫১ পিএম

Failed to load the video

এবারের ঈদুল আজহায় নির্ধারিত ১২ ঘণ্টার আগেই কোরবানির বর্জ্য অপসারণ পুরোপুরি সম্পন্ন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। সংস্থাটি ১৯ হাজার ২২৩ মেট্রিকটন বর্জ্য অপসারণের তথ্য জানিয়েছে। এক্ষেত্রে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তুলনায় এগিয়ে গেছে ডিএনসিসি। কারণ ডিএসসিসি নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টায় তাদের বর্জ্য অপসারণকাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। ঈদের রাতসহ ৩৮ ঘণ্টায় সংস্থাটি বর্জ্য অপসারণ করেছে সাড়ে ৯ হাজার মেট্রিক টন।

সোমবার (১১ জুলাই) সকালে সরেজমিনে দুই সিটির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উত্তর সিটির প্রায় সব এলাকায় বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার একাধিক ওয়ার্ডসহ প্রধান সড়কে বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার গাবতলী, গুলশান, মিরপুর, মৌচাক, উত্তরা, বনানী, বাড্ডা ঘুরে দেখা যায়, বর্জ্য অপসারণ সম্পন্ন হয়েছে। দেওয়া হচ্ছে ব্লিসিং পাউডার। অন্যদিকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার সাইন্সল্যাব এলাকার মিরপুর রোডে কোরবানির বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে। একই চিত্র হাজারীবাগ, বকশীবাজার, আরমানীটোলা, মালিটোলাসহ কয়েকটি ওয়ার্ডে।

আজ (১১ জুলাই) নগর ভবনে দুপুরে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, কোরবানির বর্জ্য ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে নগরবাসীর সহায়তায়। এবার আমাদের পশু কোরবানির জন্য নির্ধারিত স্থান কম থাকলেও মানুষ সাড়া দিয়েছে। আগামীবার এর পরিধি আরও বাড়ানো হবে। এ সময় আজকের মধ্যে নগরবাসীকে কোরবানি সম্পন্ন করার আহ্বান জানান মেয়র।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, চার হাজার ২৬৭ ট্রিপে ১৯ হাজার ২২৩ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। নগরবাসীর সহযোগিতায় আমরা গতকাল রাত ১০টার মধ্যে সব বর্জ্য অপসারণ করতে পেরেছি। প্রথমেই ধন্যবাদ দিতে চাই নগরবাসীকে। এরপর ধন্যবাদ দিতে চাই পরিচ্ছন্নকর্মীদের। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে ছয় লাখ ১৫ হাজার পলি ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে। একেকটি পলি ব্যাগে ৩৫ কেজি বর্জ্য ধারণ করতে পারে। এছাড়াও ৬০ টন ব্লিসিং পাউডার আমরা বিতরণ করেছি। এছাড়াও সেভলন বিতরণ করেছি। ডিএনসিসির তিনটি ওয়ার্ডের ৯টি নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানি দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানি হওয়ায় সর্বপ্রথম ৭নং ওয়ার্ডে দুপুরের মধ্যেই শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে। সিটি করপোরেশন থেকে ৬০০ গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তারা দিন রাত কাজ করেছে। এছাড়াও নিয়ন্ত্রণ কক্ষে কাজ করেছে। কাজ সম্পাদনে সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) জনসংযোগ সূত্র বলছে, ঈদের আগের রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত ৩৮ ঘণ্টায় সাড়ে নয় হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। পশুর হাট ও পশুর বর্জ্য অপসারণ করে তা মাতুয়াইল কেন্দ্রীয় ভাগাড়ে স্থানান্তর করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের ঢাকা মেইলকে বলেন, ৯ জুলাই রাত ১১টা থেকে ১১ জুলাই দুপুর ১টা পর্যন্ত ৩৮ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে হাজার মেট্রিক টন কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী গাড়িতে মোট দুই হাজার ৩৭০টি ট্রিপের মাধ্যমে এ বর্জ্য কেন্দ্রীয় ভাগাড়ে স্থানান্তর করা হয়েছে।   

মো. আবু নাছের বলেন, এছাড়াও দক্ষিণ সিটির ৭৫টি ওয়ার্ড থেকেই গত রাত সোয়া ১টার মধ্যে প্রথম দিনের কোরবানির পশুর শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় দিনের কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

বর্জ্য অপসারণ প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার মিরপুরের বাসিন্দা রাসেদুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর বর্জ্য অপসারণ প্রক্রিয়া সন্তোষজনক। আমরা নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করায় বর্জ্য অপসারণ প্রক্রিয়ায় গতি ছিল, তেমনি রাস্তায় বা বাসার পাশে যারা কোরবানি করেছে সে বর্জ্যও অপসারণ করা হয়েছে রাতেই।

আফতাবনগরের বাসিন্দা জামাল হোসেন ঢাকা মেইললকে বলেন, সিটি করপোরেশন এর আগে ব্যাগ এবং ব্লিসিং পাউডার দিয়েছিল। আমরা বর্জ্য নির্ধারিত ব্যাগে রেখে দিলে গাড়ি এসে নিয়ে গেছে। সিটি করপোরেশন নির্ধারিত ১২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়ায় কাজে গতি ছিল বলে মনে করেন এই বাসিন্দা।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাজারীবাগের বাসিন্দা সৌরভ বলেন, সকালে নামাজের পর কোরবানি সম্পন্ন করা হলেও সিটি করপোরেশনের গাড়ি এসেছে দেরি করে। এরই মধ্যে সব বর্জ্য অপসারণ করাও সম্ভব হয়নি। যে পরিমাণ ব্লিসিং পাউডার দেওয়া হচ্ছে তা যথেষ্ট নয় বলেও জানান এই বাসিন্দা।

লালবাগের বাসিন্দা সোহেল শাহীন বলেন, সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে সব করা সম্ভব নয়। বর্জ্য অপসারণে আমাদের নাগরিকদের করণীয় অনেক সময় ভুলে যাই। সিটি করপোরেশন ব্যাগ দেয়নি বলে অনেকেই যত্রতত্র ময়লা রাখতে দেখা গেছে। আমরা যারা লাখ লাখ টাকা খরচ করে কোরবানি করতে পারি, সামান্য দুইটা ব্যাগ কিনে ময়লা অপসারণের সক্ষমতা যেন হারিয়ে বসেছি।

ডিএইচডি/জেবি