নিজস্ব প্রতিবেদক
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০৭ পিএম
ভুয়া তথ্য দেওয়ায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের স্বামী মরহুম অধ্যাপক আবু সুফিয়ানের ‘বীরপ্রতীক’ খেতাব বাতিল করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি মুক্তিযোদ্ধা কি না, তা-ও যাচাই-বাছাই করবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) জামুকার মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) শাহিনা খাতুনের বিজ্ঞপ্তিতে খেতাবের গেজেট বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
জামুকা জানিয়েছে, খুলনা জেলার দৌলতপুর উপজেলার ১ নং ওয়ার্ড রেলগেট এলাকার বাসিন্দা অধ্যাপক আবু সুফিয়ানের নামে ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেসামরিক গেজেট নম্বর- ৪১৯৩ প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে অধ্যাপক আবু সুফিয়ানের স্ত্রী (সাবেক প্রতিমন্ত্রী) বেগম মন্নুজান সুফিয়ান তার স্বামী অধ্যাপক আবু সুফিয়ানের নামের শেষে ‘বীরপ্রতীক’ যুক্ত করার জন্য একটি ডিও লেটার বা আধা সরকারিপত্র দেন।
ডিও লেটারে মন্নুজান সুফিয়ান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য স্বামী আবু সুফিয়ান বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত হয়েছেন বলে মিথ্যা তথ্য দেন জানিয়ে জামুকার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিও লেটারে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আরো উল্লেখ করেন, মৃত অধ্যাপক আবু সুফিয়ান মুক্তিযুদ্ধের সময় শরণার্থীদের দুর্দশার সংবাদ সংগ্রহ করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে কথিকা হিসেবে পাঠ করতেন।
জামুকা বলছে, সেই ডিও লেটারের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ২০২৩ সালের ১৫ জুন এক প্রজ্ঞাপনে অধ্যাপক আবু সুফিয়ানের নামের শেষে বীরপ্রতীক যুক্ত করে বেসামরিক গেজেট নম্বর ৪১৯৩-এর সংশোধিত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে।
সম্প্রতি এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নজরে আসলে তা নিয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ১০২তম সভায় আলোচনা করা হয়। সভায় সংশোধিত বেসামরিক গেজেট ৪১৯৩ বাতিল এবং মৃত অধ্যাপক আবু সুফিয়ান মুক্তিযোদ্ধা কি না, তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য নোটিশ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
জামুকা জানিয়েছে, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে ১৯৭৩ সালে ৪৭৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বিভিন্ন খেতাবে (বীরশ্রেষ্ঠ, বীর-উত্তম, বীরবিক্রম ও বীরপ্রতীক) ভূষিত করে গেজেট প্রকাশ করে। সেখানে মৃত অধ্যাপক আবু সুফিয়ানের নাম নেই।
১৯৭৩ সালের পর মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য নতুন করে আর কাউকে খেতাব দেওয়া হয়নি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গেজেট অধিশাখা মৃত অধ্যাপক আবু সুফিয়ানের নামের শেষে বীরপ্রতীক যুক্ত করে গেজেট সংশোধন করার মাধ্যমে যে ভ্রান্ত ধারণার সৃষ্টি হয়েছে তা এর মাধ্যমে নিরসন করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে জামুকা।
এসএইচ/জেবি