জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৭ পিএম
প্রশাসন এখন নির্বাচনমুখী, তারা এখন ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘এই অল্প সময়ের মধ্যে আমি চেষ্টা করব কিছু আইন বা অধ্যাদেশ এমন করা যায় কি না, যেগুলো সাংবাদিক সমাজের দীর্ঘদিনের দাবি।’
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতর অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত কল্যাণ অনুদান/আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশ এমন একটা সময়ে এখন আছে, একটি স্বৈরাচারী ব্যবস্থা থেকে গণতন্ত্রের দিকে যাচ্ছে। একটি নির্বাচন তার জন্য একটি ভিত্তি রচনা করে যেতে পারে। নির্বাচন-পরবর্তী গণতন্ত্রের যাত্রাকে শক্তিশালী করার একটি বড় মাধ্যম হচ্ছে গণমাধ্যম। সেই কারণে গণমাধ্যমকে যেমন সুরক্ষিত রাখতে হবে, একই সঙ্গে শুধু অধিকারের কথা না বলে কর্তব্যের কথাও বলতে হবে। পত্রিকায় যেটা লেখা হয়, টেলিভিশনে যা দেখানো হয়, মানুষ সেটা বিশ্বাস করে। সব বিষয় মাথায় রেখে আমাদের কাজ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সঙ্গে থাকে, তাদের সবাইকে ক্রমান্বয়ে একটি সাপোর্ট মেকানিজমে কীভাবে নিয়ে আসা যায়, রাষ্ট্র সেটা শুরু করেছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গণতন্ত্রের কথা বিবেচনা করেই আমাদের সুরক্ষা দিতে হবে। সমাজ যেন সর্বক্ষণ সুরক্ষার মধ্যে থাকে, এটা সাংবাদিকদের মনে রাখতে হবে। সমাজ তখনই সুরক্ষার মধ্যে থাকবে, যখন আমরা আমাদের দায়িত্ব যথাযথ পালন করব।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘একসময় সাংবাদিকদের তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে সহযোগিতা করা হতো, পরবর্তীতে সাংবাদিকদের দাবির মুখে প্রাতিষ্ঠানিক সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হয়। এখানে সারাদেশ থেকে অসচ্ছল, সমস্যাগ্রস্ত সাংবাদিকরা আবেদন করেন। আমরা যাচাইবাছাই করে সহায়তা দিয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের বরাদ্দ এত অপ্রতুল যে সবাইকে সহযোগিতা করা সম্ভব হয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে ছয়শ’র অধিক সাংবাদিক আবেদন করেছিলেন, আমরা সাড়ে তিনশ’ সাংবাদিকের আবেদন মঞ্জুর করেছি। বাকিদের অপেক্ষমাণ রেখেছি। এর মধ্যে অনেকে হাসপাতালে ভর্তি, অনেকে বিভিন্ন সমস্যায় আছেন। বরাদ্দ না থাকায় আমরা অনেকের আবেদন অপেক্ষমাণ রাখতে বাধ্য হয়েছি। বিগত সময়ে এই তহবিল অপব্যবহারের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। সাংবাদিকরা জানতেনই না এই ধরনের একটি সহায়তা কার্যক্রম রয়েছে।’

বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রচার ও প্রেস) ড. মোহাম্মদ আলতাফ-উল-আলম, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক এ এস এম জাহিদ, গণযোগাযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আবদুল জলিল, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক খালেদা বেগমসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে দুইজন মৃত সাংবাদিকের পরিবারের সদস্যদের মাঝে ৬ লাখ টাকা, ১১৪ জন সাংবাদিককে চিকিৎসা ব্যয় বাবদ ৬৯ লাখ টাকা এবং ৫২ জন অসচ্ছল সাংবাদিকের মাঝে ২৬ লাখ টাকার মোট ১ কোটি ১ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ করা হয়।
টিএই/এফএ