images

জাতীয়

হাদিকে গুলি: প্রধান আসামির স্ত্রীসহ তিনজন পাঁচ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৮ পিএম

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তাঁর শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ এবং ফয়সালের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ আসামিদের আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গতকাল ১৪ ডিসেম্বর পল্টন থানায় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, হত্যাচেষ্টা, বিপজ্জনক অস্ত্র ব্যবহার করে স্বেচ্ছায় গুরুতর আঘাত এবং দুষ্কর্মে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা তৎকালীন সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর নেতৃত্বাধীন দল এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তারা হত্যা, গুম ও খুনের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। তবে ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণমানুষের অংশগ্রহণে ওই সরকারের পতন ঘটে।

জুলাই অভ্যুত্থানে আহত শরিফ ওসমান হাদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে তিনি রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে এর মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন বক্তব্য দেন। এ কারণে তিনি একাধিকবার হত্যার হুমকি পান বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই শরিফ ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটে মতিঝিল মসজিদ থেকে জুমার নামাজ শেষে প্রচারণা শেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাওয়ার পথে পল্টন থানাধীন বক্স কালভার্ট রোডে তাঁকে বহনকারী অটোরিকশায় মোটরসাইকেলে থাকা দুষ্কৃতিকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়।

গুলিবিদ্ধ হয়ে শরিফ ওসমান হাদি মাথা ও ডান কানের নিচে গুরুতর আহত হন। তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন।

সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, হেলমেট পরা দুই ব্যক্তি মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। ঘটনার সময় একই অটোরিকশায় থাকা তাঁর ভাই ওমর বিন হাদি ও সহকর্মীরা ফুটেজ দেখে ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদকে শনাক্ত করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

এজাহারে বলা হয়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করা, প্রার্থীদের মনোবল দুর্বল করা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির লক্ষ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালানো হয়। ঘটনার পর আসামিরা আত্মগোপনে চলে যান।

এআর