নিজস্ব প্রতিবেদক
১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪১ এএম
স্বাস্থ্য খাতের দুনীতিকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন আলোচিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু। তাকে দুর্নীতির শিল্পী বলা যায়। দুর্নীতি এবং স্বাস্থ্য এই দুটি শব্দ এলেই তার নাম চলে আসে। আওয়ামী সরকারের সময়ও তার কিছু হয়নি। এখনও তার কিছু হবে না। আগামীতেও হয়তো স্বাস্থ্যখাত মিঠুর দুনীতির কবলে পড়বে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর তোপখানায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবন মিলনায়তনে সর্বস্তরে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে চাই দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য আন্দোলন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. লেলিন চৌধুরী। আলোচক ছিলেন লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের প্রাক্তন ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর আশফাকুর রহমান, হ্যালক্রো গ্রুপ লিমিটেড সাবেক কনসালটেন্ট মশিউর রহমান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘বাস্তবে স্বাস্থ্যখাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় তার মাত্র অল্প অংশ মানুষের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, বাকিটা হারিয়ে যায় অস্বচ্ছ প্রক্রিয়া ও দালাল-ঠিকাদার চক্রের লুটপাটে। স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি শুধু আর্থিক নয়, এটি সরাসরি মানুষের জীবনের ক্ষতি ডেকে আনে।
তিনি বলেন, আসল চাহিদা যাচাই না করে মনগড়া তালিকা করে হাসপাতালগুলোতে যন্ত্রপাতি পাঠানো হয়, যার অনেকগুলো ব্যবহারই সম্ভব হয় না। হাসপাতালভিত্তিক যন্ত্রপাতির অস্বাভাবিক দামের প্রসঙ্গেও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কয়েক লাখ টাকার ডেন্টাল চেয়ার ৫৬ লাখ টাকায় কেনা, একই মেশিন এক হাসপাতালে ১৮ লাখে আরেক হাসপাতালে ৫৬ লাখে কেনার মতো ঘটনা কীভাবে ঘটে- প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি বলেন, দুনীতি এবং স্বাস্থ্য এই দুটি শব্দের সঙ্গে মিঠুর নাম চলে আসে। মিঠু দুনীতিকে শৈল্পিক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। দুর্নীতির শিল্পী বলা যায়। আমার যদি সুযোগ থাকতো আমি তাহলে তাকে এওয়ার্ড দিতাম। বিভিন্ন সময় নিউজ করতে গিয়ে দেখেছি কান্ট্রি অব অরজিন লেখা হচ্ছে জার্মানি, এ জন্য তিনি শিপমেন্টের কাগজে অ্যাড করেছেন পোল্যান্ড, যে মেশিন দিয়েছেন সেটি চাইনিজ এবং সেটি পুরাতন মেশিন। পুরাতন একটি মেশিন তিনি চায়না থেকে পোল্যান্ডে পাঠিয়েছেন, পোল্যান্ড থেকে শিপমেন্ট করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন। যাতে বোঝা না যায় মেশিনটা কোন দেশ থেকে আসলো। তিনি এভাবে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, আমরা সবাই তার বিরুদ্ধে লিখেছি, কিন্তু কী হয়েছে? কিছুই হয়নি। এই সরকার তাকে জেলে নিতে পেরেছে। বেরিয়েও গেছেন। আগের সরকারের হয়তো তাকে জেলে নেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। চায়নার যন্ত্রপাতির ওপর জার্মানির স্টিকার দিয়ে সরবরাহ করাসহ সব ভাগেই কেনাকাটায় দুনীতি করেছে। এভাবে প্রায় ২০ বছর তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন।
এসএইচ/এআর