জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৪ পিএম
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) ৪১তম সনদ দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে সোমবার রাজধানীতে সার্ক কৃষি কেন্দ্রে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দিবসটি স্মরণে রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল প্রাঙ্গণে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সার্ক কৃষি কেন্দ্র। এতে দক্ষিণ এশিয়ার কৃষিক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের গুরুত্ব বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়।
১৯৮৫ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রথম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে গৃহীত হয় সার্ক সনদ।
এ বছরের উদযাপন মূলত কেন্দ্রীভূত ছিল ‘ওয়ান হেলথ ধারণার আলোকে দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু-সমন্বিত লাইভস্টক খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আঞ্চলিক সহযোগিতা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধকে কেন্দ্র করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (সার্ক ও বিমসটেক) মহাপরিচালক এস. এম. মাহবুবুল আলম।
প্রধান অতিথি বলেন, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে সার্ক দীর্ঘদিন ধরে একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অনিয়মিত বৃষ্টি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ু-জনিত ঝুঁকি এই অঞ্চলের কৃষি ব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে ফেলেছে।
মাহবুবুল আলম বলেন, ‘এই প্রভাবগুলো আমাদের সম্মিলিতভাবে সবার জন্য নিরাপদ, পুষ্টিকর ও সহজলভ্য খাদ্য নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে, যাতে কেউ পিছিয়ে না থাকে।’ তিনি লাইভস্টক, খাদ্য নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্যের উদীয়মান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ওয়ান হেলথ কাঠামোর অধীনে আরও শক্তিশালী আঞ্চলিক সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পাকিস্তান কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের প্রাণিসম্পদ উৎপাদন বিভাগের পরিচালক ড. মুহাম্মদ ইকবাল আনজুম। তিনি যৌথ গবেষণা, তথ্যের সামঞ্জস্যকরণ এবং সীমান্ত-পার সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জলবায়ু-সহনশীল লাইভস্টক ব্যবস্থা গড়ে তোলার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং জুনোটিক রোগঝুঁকি মোকাবিলায় ওয়ান হেলথ হতে হবে প্রধান নির্দেশনা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মো. আবদুছ ছালাম। তিনি টেকসই কৃষি উন্নয়নে আঞ্চলিক সংহতি, জ্ঞান-বিনিময় ও বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
মূল প্রবন্ধের পূর্বে সার্ক কৃষি কেন্দ্রের পরিচালক ড. মোঃ হারুনূর রশীদ স্বাগত বক্তব্য দেন। তিনি কেন্দ্রের চলমান কার্যক্রম, অর্জন এবং ভবিষ্যৎ অগ্রাধিকার তুলে ধরেন। তার বক্তব্যে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে সমন্বিত গবেষণা, কৃষি উদ্ভাবন, প্রযুক্তি বিনিময় এবং প্রমাণভিত্তিক নীতি প্রণয়নে সার্ক কৃষি কেন্দ্রের ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়।
অনুষ্ঠানে সার্কভুক্ত দেশগুলোর দূতাবাস ও হাইকমিশনের প্রতিনিধি, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন সংস্থার প্রধান, নার্স প্রতিষ্ঠানের গবেষক এবং উন্নয়ন সহযোগী ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে এসএসি-এর দুটি নতুন প্রকাশনা “দক্ষিণ এশিয়ায় পারিবারিকভাবে পরিচালিত টেকসই প্রাণিসম্পদ খামারি: ইউএনডিএফএফ ও এসডিজি অর্জনে ভূমিকা” এবং “সার্কভুক্ত দেশসমূহে তেলবীজ ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি” উন্মোচন করা হয়।
এমআইকে/ক.ম