জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম
অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এখন রাজউকের অবস্থান জিরো টলারেন্স বলে জানিয়েছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর এফডিসিতে ‘ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি রোধে ভবন মালিকদের দায়িত্বশীলতা’ বিষয়ক একটি ছায়া সংসদের অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
রাজউকের চেয়ারম্যান বলেন, ‘চেয়ারম্যান হিসেবে আমার অবস্থান অনেকটা আসামির মতো। নগর পরিকল্পনা ও ভবন নির্মাণে রাজউকের ত্রুটি, বিচ্যুতি ও দায় রয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত, মামলা, জেল, জরিমানা এমনকি ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এখন রাজউকের অবস্থান জিরো টলারেন্স।’
তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ ভবন নির্মাণকারীদের বিদ্যুতের মিটার জব্দ করা হচ্ছে। এতে সুফল না পেলে মামলা করা হচ্ছে এবং ভবন ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। যেসব প্রকৌশলী ও স্থপতি ভবনের উপযুক্ততা নিশ্চিত না করে নকশায় স্বাক্ষর করছেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অতীতেও যারা তথ্য গোপন বা জালিয়াতির মাধ্যমে একাধিক প্লট নিয়েছেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে।’
কেরাণীগঞ্জ, বসিলা, ডেমরাসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাশয় ভরাট করে যেসব হাউজিং কোম্পানি অনুমোদন ছাড়া ভবন নির্মাণ করছে, তাদের ব্যাপারেও রাজউকের অবস্থান কঠোর বলে জানান তিনি।
চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজউকের আওতাধীন থাকা সত্ত্বেও ঢাকার আশপাশে গড়ে ওঠা হাউজিং কোম্পানিগুলো বিল্ডিং কোড বা নকশার তোয়াক্কা করছে না। নিয়মনীতি না মেনে ১৫ থেকে ২০ তলা ভবন গড়ে তোলা হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও রাজউক যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অবৈধ ভবন নির্মাণের সঙ্গে রাজউকের কিছু অসাধু কর্মচারীও জড়িত। রাজউকের অনিয়ম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাকা ছাড়া রাজউকে কোনো কাজ হতো না। বিগত সময়ের দুর্নীতি রাতারাতি সংশোধন করা কঠিন। ভবন মালিকদের সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে, ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবিলায় সরকারকেই প্রথম এগিয়ে আসতে হবে। রাস্তা, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সবকিছুই ভূমিকম্প সহনশীল করে নির্মাণ করতে হবে।’
রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ‘নকশা অনুমোদন ও তদারকি, দুটিই রাজউক করে থাকে। এ ক্ষেত্রে তদারকির দায়িত্ব অন্য কোনো সংস্থাকে দিলে আরও যুক্তিযুক্ত ও কার্যকর হবে। ভূমিকম্প রোধে শুধু রাজউক নয়, সরকারের অনেক সংস্থারই দায়িত্ব রয়েছে। ২১ নভেম্বরের ভূমিকম্পে কসাইটুলির ত্রুটিপূর্ণ ভবনের মালিককে এখনো পাওয়া যায়নি। তবে ওই এলাকার ভবন মালিকরা তাদের সমস্যা সমাধানে রাজউককে সহযোগিতা করছেন।’
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক মাসুদ করিম, সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম এবং সাংবাদিক ড. শাকিলা জেসমিন। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
এমআইকে/এএইচ