নিজস্ব প্রতিবেদক
০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:০৫ পিএম
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের আলোচনায় বিশেষভাবে আলোচিত ২০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, এ বিষয়ে কমিশনের নতুন করে বলার কিছু নেই। ইসির মতে, প্রস্তাবিত সংশোধন এখন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হাতে রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাওয়ার পরই কমিশন পরবর্তী মন্তব্য করবে।
রোববার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরের সামনে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত সংশোধিত আরপিওর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে আনা হয়েছে—রাজনৈতিক দলগুলো জোট করলেও নিজস্ব দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। আগে ছিল, জোটবদ্ধ দলগুলো ইচ্ছেমতো জোটের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে।
সম্প্রতি বিএনপিসহ কয়েকটি দল আরপিওর ২০ অনুচ্ছেদের পূর্বের বিধান বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ আট দল সংশোধিত আরপিও বহাল রাখার পক্ষে। দলগুলোর অভিযোগ, আরপিও সংশোধন এক প্রকার গোপনে করা হচ্ছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আরপিও সংশোধনের সর্বশেষ অবস্থা আমারও জানা নেই। আমার জানা থাকলে আপনাদের জানাতাম। আমাকে বলার সুযোগটা দিন। উপদেষ্টা পরিষদে নীতিগত অনুমোদনের পর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ কাজটি করে থাকে। তারা অধ্যাদেশ জারি করে। কাজেই অধ্যাদেশ জারির বিষয়টি যতক্ষণ না পর্যন্ত সম্পন্ন হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরাও আপনাদের মতোই অপেক্ষায় আছি।
আরপিওতে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা বা দলগুলোর দাবি-আপত্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়টি সরকারের আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে আছে। এর উত্তর আইন মন্ত্রণালয়ই দিতে পারবে। আমাদের করার কিছু নেই, কারণ আমাদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদে নেওয়া হয়েছে এবং সেখানে অনুমোদনও হয়েছে। এর পরবর্তী কোনো বিষয় প্রাসঙ্গিক হলে তা আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত, ইসির নয়।
২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমাদের এখান থেকে নতুন করে কিছু বলার নেই। আমরাও অপেক্ষা করছি। আইন মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত অবস্থান পাওয়ার পর এ বিষয়ে কথা বলব।
নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন নিষ্পত্তির জন্য আমরা এখনো পর্যালোচনা করছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই সপ্তাহের মধ্যেই তা সম্পন্ন করতে পারব। যেসব দল নিবন্ধনের জন্য উত্তীর্ণ হবে, তাদের সবার নাম একসঙ্গে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে।
প্রবাসী ভোটারদের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রবাসী ভোটারদের বিষয়ে দুটি বিষয় প্রাসঙ্গিক—একটি হলো ভোটার নিবন্ধন এবং অন্যটি ভোটদানের জন্য নিবন্ধন। প্রবাসীরা ভোটার হতে পারবেন এবং অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়ে ভোট দিতে পারবেন। তবে অ্যাপটি এখনো চালু হয়নি, এটি পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে। আশা করছি ১৬ নভেম্বর এটি চালু করতে পারব।
তিনি আরও বলেন, যাদের এনআইডি কার্ড আছে এবং বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি, তারা প্রবাসী ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করতে পারবেন। নিবন্ধন যেকোনো জায়গা থেকে করা যাবে, কারণ অ্যাপটি সারা বিশ্বের প্রবাসীদের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে। যারা এই অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করবেন, ইনশাআল্লাহ তারা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন।
একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনকে ‘ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন’ বলেছে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের বিষয়ে মন্তব্য করি না। এটা অতীতেও বলেছি। দয়া করে আমাকে এ ধরনের প্রশ্ন করে বিব্রত করবেন না।
নির্বাচনী সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনে এখনো তিনটি স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে সংলাপ হয়নি। এর মধ্যে প্রধান স্টেকহোল্ডার হলো রাজনৈতিক দলগুলো। আরপিও ও রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আচরণবিধির গেজেট না পাওয়া গেলে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অর্থবহ সংলাপ করা সম্ভব নয়। তাই আমরা অপেক্ষায় আছি। গেজেট পেলেই সংলাপের কাজ শুরু করে দেব।
এমএইচএইচ/এআর