images

জাতীয়

ফেব্রুয়ারিতে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ নয়, দিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার পর্যটক

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:১৩ পিএম

সেন্টমার্টিন দ্বীপে পরিবেশবান্ধব পর্যটনের লক্ষ্যে সরকার এক গুচ্ছ নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটক উপস্থিতিও এবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। 

নভেম্বর মাসে পর্যটকরা শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ করতে পারবেন, রাতযাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের অনুমতি থাকবে। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন না।
 
বুধবার (২২ অক্টোবর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ-২ শাখা হতে ১২টি নির্দেশনা সংবলিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। 
 

আরও পড়ুন:

সেন্টমার্টিন দ্বীপ নিয়ে সরকারের মহাপরিকল্পনা চূড়ান্তের পথে

উপকূলজুড়ে অদৃশ্য ছোবল, হুমকিতে প্রাণ ও প্রকৃতি!

নভেম্বর থেকে সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন পর্যটকরা: পরিবেশ উপদেষ্টা 

 

সেন্টমার্টিন দ্বীপের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকার এই নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। 

Untitled-1-68d5214b890de
ভ্রমণ পিপাসুদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা আকর্ষণীয় স্থানগুলোর অন্যতম সেন্টমার্টিন। ফাইল ছবি 


প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী প্রণীত ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা, ২০২৩’ -এর আলোকে এই নির্দেশনাগুলো কার্যকর করা হয়েছে। 
 
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিন দ্বীপে কোনো নৌযান চলাচলের অনুমতি দিতে পারবে না বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে, যেখানে প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস এবং কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে। 

St._Marting_Island
ভ্রমণ পিপাসুদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা আকর্ষণীয় স্থানগুলোর অন্যতম সেন্টমার্টিন। ফাইল ছবি 

 

সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখতে দ্বীপে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বা বারবিকিউ পার্টি করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেয়া বনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এছাড়া সৈকতে মোটরসাইকেল, সীবাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
 
এছাড়াও নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি বহন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

সরকারের প্রত্যাশা এই নতুন নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের নাজুক পরিবেশ ও অনন্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকবে এবং দ্বীপটি হবে দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
 
এদিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পরিবেশবান্ধব ভ্রমণ বাস্তবায়ন বিষয়ে এক সভা মঙ্গলবার পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, ই-টিকেটিং ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নকারী সংস্থার প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 
 
বিইউ/ক.ম