images

জাতীয়

বন্যার্তদের ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী দিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

০১ জুলাই ২০২২, ০৬:৪৮ পিএম

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার বন্যার্ত এক হাজার পরিবারের মাঝে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্যোগে ত্রাণ হিসেবে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

শুক্রবার (১ জুলাই) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এ দিন সকাল ১০টায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় ওই ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এছাড়া দুপুর ২টায় জেলা সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ হোসেনের কাছে বন্যার্তদের জন্য ২৫ লাখ টাকার জরুরি ওষুধ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ হস্তান্তর করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সুনামগঞ্জ-সিলেট অঞ্চলের ত্রাণ কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক ডা. হালিমুর রেজা।

ত্রাণ বিতরণকালে অন্যদের মধ্যে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ, শান্তিগঞ্জ উপজেলার এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাফিনা আক্তার, সিলেট-সুনামগঞ্জ অঞ্চলের গণস্বাস্থ্যের ত্রাণ কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক ডা. হালিমুর রেজা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাগলা শাখার স্থানীয় পরিচালক আদুল আওয়াল, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের শিল্পায়ন বিভাগের কর্মকর্তা আবুল হাসান, মানব সম্পদ কর্মকর্তা শাহনাজ পারভিন, পাগলা কেন্দ্রের ম্যানেজার কামাল হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবকগণ উপস্থিত ছিলেন।

Relif

ত্রাণ বিতরণ প্রসঙ্গে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সুনামগঞ্জ-সিলেট অঞ্চলের ত্রাণ কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক ডা. হালিমুর রেজা বলেন, শান্তিগঞ্জ উপজেলার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র পাগলা ও আশপাশের এলাকার দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য বিতরণের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও নির্বাচিত মহিলা মেম্বারদের নিয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর এক হাজার পরিবার বাছাই করে এই ত্রাণ দেওয়া হয়। পাশাপাশি সমাজের অবহেলিত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের মাঝেও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

ডা. হালিমুর রেজা বলেন, সিভিল সার্জন অফিসে অনুদান হিসেবে দেওয়া ওষুধগুলো ইউএনএইচসিআর-এর অর্থায়নে সরবরাহ করা হয়েছে। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) রোহিঙ্গা স্বাস্থ্যসেবায় তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যা মোকাবিলায় বিপুল পরিমাণ ওষুধ, সাধারণ সেলাই ড্রেসিংয়ের যন্ত্রপাতি ও মেডিকেল কনজিউমেবল দান করেছে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিজস্ব ছয়টি মেডিকেল টিমের পাশাপাশি সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে এই ওষুধগুলো বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য ব্যবহার হবে।

এছাড়াও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অপর একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান মাল্টিসার ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকেও বিপুল পরিমাণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এসবের মধ্যে ৪০ হাজার সার্জিক্যাল মাস্ক, ৬০০ বোতল এলকোহল হ্যান্ড রাব, পাঁচ হাজার কাপড়ের মাস্ক, ১০০ পিস ন্যাপকিন টিস্যু, ১০০ পিস ফেসিয়াল, এক হাজার বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, চার হাজার বোতল লিকুইড সাবান রয়েছে।

উল্লেখ্য, বন্যা শুরুর পর থেকে সিলেটে ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় ত্রাণ বিতরণ ছাড়াও চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। গত ১৭ জুন বন্যার্তদের মাঝে ১০০ টন শুকনো খাবার (চিড়া-গুড়) বিতরণের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু হয়। এরই মধ্যে সুনামগঞ্জ ও সিলেটের প্রায় ২০ হাজার পরিবারকে ১০০ টন চিড়া ও গুড় ছাড়া দুই লিটারের পাঁচ হাজার বোতল সুপেয় পানি ও গবাদি পশুর জন্য ১৫ টন গো-খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জের পাগলাস্থ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নওধার, বিশ্বনাথ ও সিলেট শাখার যৌথ উদ্যোগে ১০টি মেডিকেল ক্যাম্পে প্রায় দুই হাজার মানুষকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বানভাসি প্রায় দুই হাজার মানুষকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এসব শাখায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে- সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার্তদের মাঝে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের খাদ্য ও চিকিৎসা সেবা অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি বন্যা পরবর্তী সময়েও কৃষি ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

ডিএইচডি/আইএইচ