images

জাতীয়

একসঙ্গে চাকরিতে নবদম্পতি, একজনের মরদেহ মর্গে, আরেকজন নিখোঁজ

আব্দুল কাইয়ুম

১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৪২ পিএম

‎মারজিয়া সুলতানা ও জয় মিয়া। সম্পর্কে চাচাত ভাই-বোন। তিন মাস আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। মাত্র আট দিন আগে ঢাকায় এসে রূপনগরে তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরিতে যোগ দেন দুজন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের কাছে হার মানতে হয় তাদের। মিরপুরের কেমিক্যাল গোডাউন ও গার্মেন্টসে আগুনের ঘটনায় প্রাণ হারান দুজন। এ ঘটনায় জয় মিয়ার মরদেহের সন্ধান পেলেও তার স্ত্রী মারজিয়া সুলতানার এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। 

‎বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে মারজিয়া সুলতানার বাবা মো. সুলতান ও জয় মিয়ার বাবা সবুজ মিয়াকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। সুলতান ও সবুজ সম্পর্কে আপন ভাই। তারা নেত্রকোণা জেলার পারহাট্টা থানার নল্লা গ্রামের বাসিন্দা।

 

Fire3
মিরপুরে কেমিক্যাল গুদামে আগুনের ঘটনায় হতাহতদের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: ঢাকা মেইল


‎‎সবুজ মিয়া বলেন, আমার ছোট ভাইয়ের মেয়ের সঙ্গে আমার ছেলেকে বিয়ে দিয়েছি। তিন মাস আগে আমরা পারিবারিকভাবে বিয়ে দেই তাদের। এরপর তারা সপ্তাহ খানেক আগে ঢাকায় আসে। মিরপুর রূপনগর এলাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। গতকাল মঙ্গলবার আগুনের  ঘটনায় আমার ছেলে ও ছেলের স্ত্রী মারা যায়। আমার ছেলেকে শনাক্ত করা গেলেও বৌমার এখনও খোঁজ মেলেনি। তাকে আমরা কোথাও পাচ্ছি না। 

‎এদিকে মো. সুলতান জানান, মিরপুরের রূপনগরে আগুন লাগা পোশাক কারখানায় হেলপার হিসেবে চাকরি করতেন মেয়ে মারজিয়া সুলতানা। একই প্রতিষ্ঠানে অপারেটর হিসেবে চাকরি করতেন মেয়ে জামাই জয় মিয়া। মঙ্গলবার ১১টা ২ মিনিটে আমার মেয়ে জামাই ফোন দিয়ে জানায় গার্মেন্টসে আগুন লাগছে। এরপর ফোন কেটে যায়। আর যোগাযোগ করতে পারি না। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে জয়ের লাশ শনাক্ত করি। কিন্তু এখনও আমার মেয়ের খোঁজ পাইনি। 

Fir2_20251015_152215326
কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন ২৭ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে। ছবি: ঢাকা মেইল 

‎কান্না বিজড়িত কন্ঠে সুলতান বলেন, মাত্র তিন মাস আগে তাদের বিয়ে হয়েছে। কাজের জন্য ঢাকায় এসেছিল। আজ মাত্র সাত দিন হচ্ছে তারা দুজনেই এই গার্মেন্টসে চাকরি শুরু করে। কিন্তু এভাবে তাদের জীবন দিতে হবে কে জানতো। আমার মেয়ে কি বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে কীভাবে জানবো? কীভাবে খোঁজ পাবো আমার মেয়ের। 

‎সবুজ মিয়া ও মো. সুলতান জানান, গতকাল আগুনের খবর পেয়ে দুই ভাই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। সেখানে জয় ও মারজিয়াকে না পেয়ে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে ছুটে আসেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আজ বুধবার জয় মিয়ার মরদেহ খুঁজে পেয়েছেন। এখনো মারজিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দুই ভাই সন্তানের খোঁজে হাসপাতালের মর্গে অপেক্ষা করছেন।

‎একেএস/ক.ম