নিজস্ব প্রতিবেদক
১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০২:১৯ পিএম
‘গতকাল আমার ভাই ডিউটিতে এসে সকালে ভিডিও কলে তার ছোট ছেলের সাথে কথা বলেছিল। এরপর দুপুরের পর টিভিতে খবর দেখে আমার ভাইয়ের স্ত্রী আমার ভাইকে ফোন করে। ততক্ষণে আমার ভাইয়ের ফোন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে আমাদের ফোন দিয়ে জানালে আমরা ছুটে আসি। কিন্তু আমার ভাইকে আর খুঁজে পাই না। ভাইকে খুঁজতে খুঁজতে হাসপাতালের মর্গে এসে হাতের আংটি দেখে আমার ভাইকে চিনতে পারি।’
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল থেকে ভাইকে হারিয়ে মাহমুদা খাতুন ঢাকা মেডিকেল মর্গের সামনে বসে এভাবেই আহাজারি করছিলেন।
মাহমুদা খাতুন জানান, তার ভাইয়ের নাম আল-মামুন। তাদের গ্রামের বাড়ি বরগুনার আমতলি থানায়। তিনি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে এই গার্মেন্টসে চলতি মাসের ১ তারিখে জয়েন করেন।
ভাইয়ের জন্য আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, ‘সাত ভাই-বোনের মধ্যে আমার ভাই ছিল ৬ নম্বর। সে আমাদের খুব আদরের ভাই ছিল। গতকাল এসে আমার ভাইকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। কোথায়ও পাই নি। হাসপাতালে এসে হাতের আংটি দেখে ভাইকে চিনে ফেলি। আগুনের ধোঁয়ায় তার মুখ কালো হয়ে গেছে। মুখ দেখে চেনা যায় না। তার বা ও ডান পা এবং কাঁধের অংশ পুড়ে গেছে। তার চুল, দাড়ি সব ঠিক আছে। পরনের শার্ট প্যান্ট কালো হয়ে গেছে। আমার আদরের ভাইটা এভাবে শুয়ে থাকবে, কল্পনা করা যায় না।’

তিনি জানান, আল-মামুনের দুই ছেলে। গতকালও অফিসে এসে ছোট ছেলের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছেন। ছোট ছেলে কথা বলতে পারে না। কিন্তু মোবাইলের ওপার থেকে বাবার কথা শুনে শান্ত হয়ে বসে থাকে।
মাহমুদা জানান, তারা ভাইয়ের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাবেন। সেই প্রস্তুতি চলছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে মিরপুরের রূপনগরে একটি গার্মেন্টস ও একটি কেমিক্যাল গোডাউনে লাগা আগুনে এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। দগ্ধ হয়েছেন বেশ কয়েকজন। নিখোঁজ রয়েছেন অনেকেই। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
একেএস/জেবি