নিজস্ব প্রতিবেদক
১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৬ এএম
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে পোশাক কারখানা ও কেমিক্যালের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১৬ জন শ্রমিকের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মর্গে রাখা হয়েছে।
তবে চেহারা দেখে কারও পরিচয় শনাক্ত করার কোনো উপায় নেই। প্রতিটি দেহই পুড়ে অঙ্গার। সে কারণে মরদেহগুলোর ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করে তারপর পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহগুলো ঢামেক হাসপাতালের মর্গে আনা হয়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক।
তিনি জানান, ‘সব মরদেহই আগুনে পোড়া। দেখে পরিচয় শনাক্ত করার কোনো উপায় নেই। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নিহতদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ এবং ৭ জন নারী রয়েছেন। ডিএনএ পরীক্ষার পর মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
এদিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসে প্রথমে শ্রমিকরা অজ্ঞান হয়ে যান। পরে আগুনে দগ্ধ হয়ে ১৬ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ‘নিহত সবার মরদেহ পোশাক কারখানার ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই ভবনের নিচতলায় আগুনের তীব্রতা থাকায় এবং ছাদে ওঠার দরজা দুটি তালা দিয়ে বন্ধ থাকায় অনেকেই ভবন থেকে বের হতে পারেননি। ফলে শ্রমিকরা দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় আটকে বিষাক্ত গ্যাসে অজ্ঞান হয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান।’
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রথমে পাঁচটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করে, পরে আরও সাতটি ইউনিট যোগ দেয়। সবমিলিয়ে ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
এদিন দুপুরে প্রথমে কেমিক্যালের গোডাউনে আগুন লাগার পর চারদিকে বিষাক্ত ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে থাকে। দ্রুত আক্রান্ত হন ঠিক পাশের চারতলা পোশাক কারখানার ভবনটির কর্মীরা।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, পাশের কারখানার আগুন দ্রুত সরু গলির ওপারের পোশাক কারখানার ভবনের নিচে ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে পোশাক কারখানার কর্মীরা নিচে নামতে পারেননি। আবার ছাদের দরজায় তালা থাকায় ধোঁয়া থেকে বাঁচতে ওপরেও যেতে পারেননি।
উদ্ধারকারীদের ধারণা, এ কারণে কর্মস্থলেই বিষাক্ত ধোঁয়ায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন পোশাক কারখানাটির ওপর তলায় থাকা কর্মীরা। পরে সেই ভবনের ওপরের দিকে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়লে পুড়ে অঙ্গার হতে হয় তাদের।
একেএস/এএইচ