নিজস্ব প্রতিবেদক
৩০ জুন ২০২২, ১১:৩০ পিএম
ক’দিন বাদেই পালিত হবে মুসলিমদের বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকে ঘিরে তাই প্রস্তুত হচ্ছে কোরবানির পশুর হাট। সেই সঙ্গে ব্যস্ত সময় কাটছে হাট ইজারাদারদের। তবে এবারের ঈদুল আজহায় বিভিন্ন স্থানে বসা কোরবানির হাটগুলোয় আসা ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সংশ্লিষ্টদের মানতে হবে ১৬টি নির্দেশনা।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে এই নির্দেশনার কথা জানানো হয়েছে। নির্দেশনাগুলো হলো-
১। কোরবানির হাট বসানোর জন্য পর্যাপ্ত খোলা জায়গা নির্বাচন করতে হবে। সেই সঙ্গে কোনো অবস্থাতেই বদ্ধ জায়গায় পশুর হাট বসানো যাবে না।
২। ইজারাদারের হাট বসানোর আগে মহামারি প্রতিরোধী সামগ্রী যেমন-মাস্ক, সাবান, জীবাণুমুক্তকরণ সামগ্রী ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হবে। সেই সঙ্গে পরিষ্কার পানি সরবরাহ ও হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল সাবান/সাধারণ সাবানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এর পাশাপাশি নিরাপদ বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৩। কোরবানির হাটের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও হাট কমিটির সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি হাট কমিটির সবার ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদার করাসহ মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৪। পশুর হাটের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা দিতে হবে। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের বিয়ষগুলো যেমন- মাস্কের সঠিক ব্যবহার, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার, শারীরিক দূরত্ব, হাত ধোয়া, জীবাণুমুক্তকরণের মতো বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধিসমূহ সার্বক্ষণিক মাইকে প্রচার করতে হবে।
৫। মাস্ক ছাড়া কোনো অবস্থাতেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের কেউ হাটের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। সেই সঙ্গে হাট কর্তৃপক্ষ চাইলে বিনামূল্যে মাস্ক সরবরাহ করতে পারেন বা এর মূল্য নির্ধারণ করে দিতে পারেন।
৬। প্রতিটি হাটে সিটি করপোরেশনের ডিজিটাল পর্দায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি প্রচার করতে হবে।
৭। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বসা পশুর হাটগুলোর নির্দিষ্ট গেট (প্রবেশ ও বাহির) করতে হবে।
৮। হাটে পর্যাপ্ত পানি ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে বর্জ্য দ্রুত পরিষ্কারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সেই সঙ্গে কোথাও জলাবদ্ধতা তৈরি করা যাবে না।
৯। প্রতিটি হাটে সিটি করপোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদের এক বা একাধিক ভ্রাম্যমাণ স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল টিম গঠন করে সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পাশাপাশি মেডিকেল টিমের কাছে শরীরের তাপমাত্রা মাপার জন্য ডিজিটাল থার্মোমিটার রাখা যেতে পারে, যাতে প্রয়োজনে হাটে আসা সন্দেহজনক করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করা যায়। এছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে রোগীকে আলাদা করে রাখার জন্য প্রতিটি হাটে একটি আইসোলেশন ইউনিট (একটি আলাদা কক্ষ) রাখা যেতে পারে।
১০. প্রতিটি হাটে পশুর দূরত্ব এমনভাবে বজায় রাখতে হবে যেন ক্রেতারা কমপক্ষে তিন ফুট বা দুই হাত দূরত্বে থেকে কোরবানির পশু কিনতে পারেন।
১১। হাটে ভিড় এড়াতে মূল্য পরিশোধ ও হাসিল আদায় কাউন্টারের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
১২। কোরবানির হাটে মূল্য পরিশোধের সময় সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়ানোর সময় যেন কম হয়, সংশ্লিষ্টদের সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পাশাপাশি লাইনে তিন ফুট বা কমপক্ষে দুই হাত দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে রেখা টেনে বা গোল চিহ্ন দিতে হবে।
১৩। সব পশু একত্রে হাটে প্রবেশ না করিয়ে, হাটের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী পশু প্রবেশ করাতে হবে।
১৪। কোরবানির হাটের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করা সম্ভব, এমন সংখ্যক ক্রেতাকে হাটে প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে। এছাড়া অবশিষ্ট ক্রেতারা হাটের বাইরে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে অপেক্ষা করবেন। এছাড়া একটি পশু কেনার জন্য এক বা দুই জনের বেশি ক্রেতা হাটে প্রবেশ করবেন না।
১৫। অনলাইনে পশু বেচা-কেনার জন্য জনগণকে উৎসাহিত করা যেতে পারে।
১৬। স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে সব কাজ নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দেশের আকাশে পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামী ১০ জুলাই দেশে মুসলিমদের বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে। আর ঈদুল আজহাকে ঘিরে এ বছর সারাদেশে চার হাজার ৪০৭টি কোরবানির হাট বসবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
/আইএইচ