images

জাতীয়

‘প্রকল্প পরিচালকদের ঢাকায় থাকা জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৯ জুন ২০২২, ০৪:০৬ পিএম

বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকরা প্রকল্প এলাকায় না থেকে ঢাকায় থাকছেন জানিয়ে এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ‘প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হচ্ছেন প্রকল্প পরিচালক। আগেও এ বিষয়ে কথা বলেছি। দেখা যায়, পঞ্চগড়ের কোনো প্রকল্পের পরিচালক ঢাকায় থাকছেন, এটা জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাজের কাছে কেউ থাকতে চাচ্ছে না। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীকে পাওয়া যায় না; তাদের নাটাই ঢাকায়, কিন্তু সুঁতা কাটা যাচ্ছে না।’

বুধবার (২৯ জুন) রাজধানীর লেকশোর হোটেলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও দ্যা এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে আয়োজিত এক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘সরকারি অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন’ শীর্ষক সংলাপে অংশ নিয়ে এম এ মান্নান বলেন, ‌'প্রশাসনের অনেক বিধি অপ্রয়োজনীয়। ব্রিটিশ, পাকিস্তানি ও সামরিক শাসকেরা এসব করেছেন, যার এখন কোনো বাস্তবতা নেই। কিন্তু অনেক দুষ্টু আমলা এসব বিধান চাতুরির সঙ্গে কাজে লাগাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে এসব বদলানোর, তা সত্ত্বেও এসব পরিবর্তন করা যাচ্ছে না। আইনকে আইন দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে হবে। আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।'

অবকাঠামোকে দেশের প্রাণ উল্লেখ করেন মন্ত্রী বলেন, ‘অবকাঠামো আমাদের মূল লক্ষ্য। এসব দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিবেশবান্ধব হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া দেশের গ্রামীণ এলাকায় সড়কের নিচ দিয়ে আন্ডারপাস করার পরিকল্পনা আছে, যাতে কৃষক নির্বিঘ্নে গরু নিয়ে রাস্তা পেরোতে পারেন। অর্থাৎ মানুষের প্রয়োজন যেন পূরণ হয়।’

সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে উল্লেখ করে সরকারদলীয় এমপি উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ বলেন, ‘চুরি বলব না, তবে আমাদের প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে।’ প্রকল্প বাস্তবায়নে অপচয় হচ্ছে উল্লেখ করে আব্দুস শহীদ বলেন, ‘অনেক প্রকল্পের পরিচালকেরা নতুন গাড়ি কিনছেন, যদিও তিনি এমনিতেই গাড়ি পান। এমনকি প্রকল্প এলাকায় তাকে প্রতিদিন যেতে হয় না। ফলে যেখানে তেলের দাম নিলেই যথেষ্ট, সেখানে তারা নতুন গাড়ি কিনছেন। এসব বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে।’ এছাড়া সংসদের বিভিন্ন স্থায়ী কমিটি শক্তিশালী করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংস্থাটির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান তার উপস্থাপনায় বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের কাঠামো নির্ধারণ করা গেলে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে। এ ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু আমাদের জন্য বড় নজির, যা নির্ধারিত (বর্ধিত) সময়ের মধ্যে শেষ করা গেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আরও বেশ কটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য আছে সরকারের। কাঠামো নির্ধারণ করা গেলে এগুলো সুশাসনের সঙ্গে বাস্তবায়ন করা যাবে। এক্ষেত্রে ওইসিডির কাঠামো অনুসরণ করা যেতে পারে। যা অনেক উন্নত দেশে অনুসরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন-এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। প্যানেল আলোচক ছিলেন ডাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি রিজওয়ান রহমান, পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ।  

ডব্লিউএইচ/জেবি