images

জাতীয়

‘ফেরির বিড়ম্বনায় মা-খালাদের শ্বশুরবাড়ি নিতে পারতাম না’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৭ জুন ২০২২, ০৫:০৬ পিএম

লাখ লাখ মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের জায়গা ছিল পদ্মা পাড়ের মাওয়া-কাওড়াকান্দি ফেরিঘাট। বিশেষ করে ঈদ বা লম্বা ছুটিতে এই দুর্ভোগ স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়ে যেত। তাই ইচ্ছা থাকলেও অনেকে ফেরিঘাটের কষ্টের কথা ভেবে যাত্রা থেকে বিরত থাকতেন। কিন্তু সেসব চিত্র এখন অনেকটা ইতিহাস। কারণ দেশের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় মাত্র ছয় মিনিটে এপার থেকে ওপার পৌঁছানো যাচ্ছে।

ঈদুল আজহার আগে সেতু চালু হওয়ায় বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের মধ্যে খুশির জোয়ার বইছে। কিন্তু এই পারের বাসিন্দা না হলেও মিরপুরের স্থায়ী বাসিন্দা আবু আহমেদ আব্দুল্লাহর মনে অন্যরকম তৃপ্তি এনে দিয়েছে পদ্মা সেতু।

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ আব্দুল্লাহ ঢাকা মেইলকে বলেন, 'আমি মিরপুরের স্থায়ী বাসিন্দা হলেও শ্বশুরবাড়ি ফরিদপুরে৷ শুধু ফেরি, লঞ্চঘাটের দুর্ভোগের কারণে আমার মা, খালারা কেউ এপারে আসতে চাইতেন না। এখন সেতু হয়ে গেল। ভাঙ্গা থেকে সেতুতে উঠলাম, মনে হয় বিমানে এসেছি।'

setu2

পদ্মা সেতু আত্মীয়তার বন্ধন আরও সুদৃঢ় করবে এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আমরা আরও কাছাকাছি হয়ে গেলাম। আমাদের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। সবাইকে আত্মীয়ের বাড়িতে নেওয়া সম্ভব হবে। 

গত শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমের প্রায় ২১ জেলার মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। রোববার (২৬ জুন) পর্যন্ত সেতুতে পারাপারের সময় গাড়ি থেকে নামা, ছবি তোলা এসবে কিছুটা ছাড় থাকলেও সোমবার থেকে শুরু হয়েছে কড়াকড়ি। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মোটরসাইকেল চলাচল।

রোববার দুপুরে পদ্মা সেতুর মাঝ বরাবর গাড়ি থেকে নেমে স্ত্রী, সন্তান ও একজন স্বজনসহ নামেন আবু আহমেদ। কোলে থাকা দুই বছরের একটু বেশি বয়সী সন্তানকে নিয়ে সেলফি তুলে পুরো পরিবার পদ্মা সেতুর সঙ্গে নিজেদের স্মৃতি ধরে রাখেন। সেসময় সবার চোখেমুখে ছিল স্বস্তির হাসি।

কথা হয় পরিবারটির সঙ্গে। ছোট্ট শিশুর বাবা জানান, সামনে হয়তো সুযোগ নাও হতে পারে সেতুতে দাঁড়ানোর। তাই আজকের সুযোগ মিস করতে চাননি।

setu3

আবু আহমেদ জানান, তার সন্তানের নাম ওয়াজিদ আমান। দুই বছর কয়েক মাস বয়সী ওয়াজিদও এসেছেন বাবা-মায়ের সঙ্গে পদ্মা সেতু দেখতে। 

পদ্মা সেতুর টোলের পরিমাণ নিয়ে কথা বললে তিনি বলেন, অনেক সময় টাকার চেয়ে স্বস্তিতে চলাটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। সে হিসেবে টোলটা খুব বেশি হয়নি।

টোল ব্যবস্থা সহজীকরণে কী করা যেতে পারে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির যুগ। সবকিছু ডিজিটাল সিস্টেমে হচ্ছে। সেখানে সেতুর টোলও আরও আধুনিক করা উচিত হবে। এমনও হতে পারে অ্যাপসের মাধ্যমে টোল দেওয়া যাবে। এতে সময় খুব কম লাগবে। ভোগান্তি কমবে।

বিইউ/জেবি