নিজস্ব প্রতিবেদক
২৩ আগস্ট ২০২৫, ১০:০১ এএম
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এসেছে বড় পরিবর্তন, আর সেই পরিবর্তনের হাওয়ায় স্বাভাবিক হচ্ছে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক। গত বছর ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আবার নতুন মোড় নিচ্ছে।
এর ফলস্বরূপ, পাকিস্তানের উচ্চপদস্থ মন্ত্রী ও সচিবদের ঘন ঘন ঢাকা সফর কূটনৈতিক অঙ্গনে সৃষ্টি করেছে ব্যাপক আগ্রহ। বিশেষ করে নয়াদিল্লি এই সফরের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে, কারণ ইসলামাবাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এখনও ভালো নয়।
কেন এই হাইভোল্টেজ সফর?
গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক প্রায় তলানিতে নেমে এসেছিল। কিন্তু গত এপ্রিল থেকে সেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবরা ঢাকায় একটি বৈঠক করেন, যা সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের প্রথম পদক্ষেপ। তারই ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার (২৩ আগস্ট) ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। তিনি তিন দিনের সফরে আসছেন, যা কার্যত ৪৮ ঘণ্টার। এপ্রিল মাসে তার এই সফরটি স্থগিত হয়েছিল কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার কারণে। এরপর ৩ দফা তারিখ হয়েছে, কিন্তু সফর হয়নি। স্থগিত হওয়া সফরেই শনিবার ঢাকা আসছেন ইসহাক দার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, ইসহাক দারের এই সফরে দুই দেশের সম্পর্ককে রাজনৈতিক পর্যায়ে আরও নিবিড় করার উপায় নিয়ে আলোচনা হবে। এটি কেবল সরকারি বৈঠকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন। এর অংশ হিসেবে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে পারেন এবং জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ইসলামী দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গেও তার সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
>> আরও পড়তে পারেন
পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির চিন্তা কতটা কাজে দেবে?
কী কী চুক্তি হতে পারে?
সফরের দ্বিতীয় দিনে ইসহাক দার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। দুই ঘণ্টার এই বৈঠক শেষে পাঁচটি থেকে ছয়টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
এছাড়াও, তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
>> আরও পড়তে পারেন
আলোচনার টেবিলে কী থাকবে?
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যবসা, বিনিয়োগ, যোগাযোগ, কৃষি এবং দুই দেশের মানুষের অবাধ চলাচলসহ দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, অন্যান্য দেশের মতোই পাকিস্তানের সঙ্গে একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে ব্যবসা ও বিনিয়োগের পাশাপাশি মানুষের চলাচল সহজ করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অতীতে যে বৈরী সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল, ঢাকা এখন তা থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। ইসহাক দার তার সফরের দ্বিতীয় দিনে একটি প্রাতরাশ বৈঠকে অংশ নেবেন, যেখানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিনসহ ব্যবসা ও বিনিয়োগ খাতের সরকারি ও বেসরকারি জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
/এএস