images

জাতীয়

পদ্মার ঘাটে শেষ বেলায় দুর্ভোগে পড়া যাত্রীদের গল্প!

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৫ জুন ২০২২, ১২:১৬ এএম

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের মধ্যে মাওয়া রুট দিয়ে চলাচল করা যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়ার ঘটনা ছিলো নিত্যদিনের ঘটনা। সেই দুর্ভোগ লাঘব করবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। কিন্তু বহুল প্রতিক্ষীত পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনে মাওয়া ঘাটে এসে দুর্ভোগে পড়েছেন কয়েকশ যাত্রী৷ 

অন্যসময় সারারাত ফেরি চলাচল করলেও শুক্রবার সবশেষ ফেরিটি ঘাট ছেড়ে গেছে সন্ধ্যা সাতটায়। ফলে সাতটার পর যারাই ওপারে যেতে ঘাটে এসেছেন তারাই পড়েছেন বিপাকে। যদিও শনিবার সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার কারণে এই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু এমন তথ্য না জেনে এসে  বিপাকে পড়েছেন। একজন বলছিলেন,  ‘কালকের পর তো আর ঘাটে বসে থাকতে হবে না। শেষ দুর্ভোগটা আমাদের ওপর দিয়ে গেল।’

সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ফেরি ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার অবসান হবে৷ মাত্র ছয় মিনিটে পার হওয়া যাবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।

অন্যদিকে সেতু চালু হলে এই ঘাটে বন্ধ হয়ে যাবে ফেরি চলাচল। লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচলও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে বলেই প্রবল ধারণা করা হচ্ছে।

নিজেদের অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু শনিবার সকালে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন রোববার সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। 

এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ঘাটে এসে ফেরি ছাড়ার অপেক্ষা করছিলেন মাওলানা শহীদুল ইসলাম। রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, 'পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া যাবো। সন্ধ্যা বেলা লঞ্চ বন্ধ হলেও আগে তো ফেরি সারারাত চলত। আজকে তো দেখি বন্ধ। এখন কেমনে যাবো কিছুই জানি না। সারারাত ফেরিতে বসে থাকতে হবে মনে হয়।'

এদিকে দীর্ঘ সময় ফেরি না ছাড়ায় অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। অবশ্য ফেরির দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউকে না পাওয়া গেলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক স্টাফ জানান, আজকে আর ফেরি ছাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে বিশেষ কোনো প্রয়োজনে উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা আসলে ফেরি ছাড়ার সম্ভাবনা আছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পরও কোনো আলামত দেখতে না পেয়ে ফেরিতেই স্লোগান শুরু করেন আটকে পড়া মানুষেরা। 

'আমাদের দাবি-আমাদের দাবি, ফেরি ছাড়ো, ছাড়তে হবে। এক দফা-এক দাবি, ফেরি ছাড়ো ছাড়তে হবে' এমন স্লোগান ধ্বনিত হয় পুরো ফেরি ঘাটজুড়ে।
এমন পরিস্থিতিতে ফেরির লাইট অফ করে দিলে তারা ফেরি ছেড়ে উপরে চলে আসে। তারা সড়কে স্লোগান দিতে দিতে ফেরি ঘাটের আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ শেষ আবার ফেরিতে অবস্থান নেয়। 

শরিফুল ইসলাম নামের একজন ঢাকা মেইলকে বলেন,   পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগের দিন মনে হয় ফেরিতেই ঘুমাইতে হবে। গাজীপুর থেকে রওনা দিয়ে ঘাটে আইসা আটকে গেলাম। এরা তো ছাড়বে না। '

বিইউ/এমএ