জেলা প্রতিনিধি
২৪ জুন ২০২২, ১০:৪৩ পিএম
রাত পোহালেই উদ্বোধন হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। বহুল প্রত্যাশিত এই সেতু দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ছাড়াও কৃষিখাত সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে কর্মস্থানের সৃষ্টিসহ আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের দ্বার খুলবে। সেই সঙ্গে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচলে কোনো ধরণের দুর্ঘটনা ছাড়াই নির্বিঘ্নে পথ চলার আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন যাত্রীরা।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে ফরিদপুর থেকে উৎপাদিত কৃষিপণ্য রাজধানী ছাড়াও অন্যত্র সহজেই বাজারজাত করা যাবে। সেই সঙ্গে এই অঞ্চলে গড়ে উঠবে নানা ধরনের শিল্প-কারখানা। পাশাপাশি নদী পারাপারে আর কোনো বাধা না থাকায় যাতায়াতসহ আবাসন ও পর্যটন খাতেও অনেক পরিবর্তন হবে। সবমিলিয়ে সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই পদ্মা নদী পারি দিতে দুই পাশের যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনিশ্চিত যাত্রা নিয়েও আর শঙ্কা করতে হবে না। এতে ঝড়-বৃষ্টি আর বৈরি আবহাওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা নদী পারাপারের প্রবণতাও কমবে।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের প্রতিক্রিয়ায় ফরিদপুর চেম্বার অব কমার্স সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, এই সেতু চালু হলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় উৎপাদিত ফসল- পেঁয়াজ, মরিচ, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্য পারাপারে আর কোনো ভোগান্তি থাকবে না। সেই সঙ্গে সোনালী আঁশ (পাট) উৎপাদনে বৃহৎ জেলা হিসেবে ফরিদপুর অঞ্চলের চাষিরাও লাভবান হবেন।
এ ব্যাপারে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, জেলা শহর থেকে পদ্মা সেতুর দূরত্ব মাত্র ৫৯ কিলোমিটার। ফলে ভাঙ্গা উপজেলা থেকে এক্সপ্রেসওয়ের পথ ধরে নিরাপদে দ্রুত পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করার সুফল ভোগ করবে জনগণ। আর ভাঙ্গা চৌরাস্তা এখন বিশ্বের উন্নত দেশের সড়কের মতো নান্দনিক ও যুগোপযোগী সড়কে রূপ নিয়েছে। যেখানে কোনোপ্রকার বাধা ছাড়াই সকল প্রকার গাড়ি ঢাকা-খুলনা-বরিশাল মহাসড়কে যাতায়াত করতে পারবে।
কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী আরও বলেন, এক্সপ্রেসওয়ে রাস্তার মাঝ দিয়ে শোভাবর্ধন বাহারি ফুলের রং মানুষের মনকে আরও রঙিন করবে। এছাড়া বেশকিছু ওভারব্রিজ ও আন্ডারপাসের মাধ্যমে সকল প্রকার যানবাহন নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে। সেই সঙ্গে রেললাইন চালুর পরে রেল ক্রসিংয়েরও কোনো ঝামেলা থাকবে না।
এদিকে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের প্রতিক্রিয়ায় ফরিদপুরের মুক্তিযোদ্ধা মো. বাবুল ঢাকা মেইলকে বলেন, এই সেতু চালুর ফলে অবহেলিত ফরিদপুরসহ আশপাশের অঞ্চলে বিভিন্ন ছোট-বড় শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। তাতে অনেক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এই অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ফরিদপুরবাসী কৃতজ্ঞ। এই অঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন আজ বাস্তবে ধরা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামীকাল শনিবার (২৫ জুন) পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এরপর মাদারীপুরের শিবচরে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন সরকারপ্রধান। এ উপলক্ষে ওই এলাকায় ১০ লাখ মানুষের জমায়েত করার পরিকল্পনা করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এরই ধারাবাহিকতায় পদ্ম সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে শনিবার কালে প্রায় অর্ধশত লঞ্চ ও টলার নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কাঁঠালবাড়ি ঘাটে অনুষ্ঠিতব্য প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় অংশ নেবেন।
/আইএইচ