images

জাতীয়

এডিসি আখতার গালি দিয়ে আমাকে বললেন ‘তোকে গুলি করে দেবো’

মোস্তফা ইমরুল কায়েস

০৫ আগস্ট ২০২৫, ০৬:৩৮ পিএম

‘এই শুয়োরের বাচ্চাকে নিয়ে চলো, ওকে গুলি করে দিবো।’ গত বছরের জুলাইয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাংবাদিক কামরুজ্জামান বাবলুকে আটকের পর এভাবেই হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন তৎকালীন রমনা জোনের এডিসি শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম।

গত বছরের ৫ আগস্ট সকালে সাংবাদিক বাবলু গিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। তিনি টিএসসিতে দাঁড়িয়ে দেখতে পান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কিছু ছাত্রকে আটক করছে পুলিশ। এরপর সেখানে ছুটে যান তিনি। গিয়ে তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা করলে পুলিশ তাকে আটক করে। এরপরই তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হত্যার হুমকি দেন এডিসি আখতারুল ইসলাম।

সেই স্মৃতি স্মরণ করে বাবলু বলেন, ঢাকায় তখন তো চারদিকে বিভীষিকাময় অবস্থা। পুলিশ একটা পিঁপড়া দেখলেও গুলি করবে এমন পরিস্থিতি। আমরা সেদিন সকালে প্রথমে টিএসসিতে গেলাম। আমার সঙ্গে এক নারী সহকর্মী ছিলেন। সেখানে গিয়ে দেখি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লোহার বেড়া টপকে ভেতরে থাকা ছাত্রদের ধরছে পুলিশ। সেখানে গিয়ে সাংবাদিক হিসেবে গেলাম যাদের ধরছে তাদের পরিচয় জানার জন্য। আমাকে দেখামাত্র এডিসি আখতার অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। আমাকে বলতে থাকে, আমি আপনাকে সহ্য করতে পারছি না। আপনি চলে যান।

সেদিন তারপ্রতি এডিসি আখতার কেন এত ক্ষীপ্ত ছিল তার নেপথ্যের কারণ তুলে ধরে বাবলু এই প্রতিবেদককে বলেন, মূল কথা হলো, ঘটনার আগের দিন আমরা তাকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নাহিদ, সারজিস ও হাসনাতকে ধরতে বাধা দিয়েছিলাম। এ নিয়ে তার সঙ্গে আমাদের তর্কবিতর্ক বাঁধে। ফলে আমাকে চিনতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তিনি। এক পযায়ে আমাকে পুলিশ ধরে ফেলে। তখন এডিসি আখতারুল ইসলাম বলতে থাকেন, ‘এই শুয়োরের বাচ্চাকে ধরে ফেল। ওকে গুলি করে দিব।’

সেই মুহূর্তের অনুভূতির কথা তুলে ধরে বাবলু বলেন, আমি তখন আসলে মৃত্যুর কাছাকাছি ছিলাম। এরপরও সাহস নিয়ে তাকে বলি, আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন কেন? আমার অপরাধ কী? আমি তো সাংবাদিক। তখন বলে তুই কোন পত্রিকায় কাজ করিস? আমি বলি, নিউ নেশনে। তিনি তখন বলেন, তুই তো বিএনপি-জামায়াত রাজাকারের পত্রিকায় কাজ করিস। এই ওরে নিয়ে চল। 

সাংবাদিক বাবলু বলেন, এডিসি আখতার আমাকে আরও নানা বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এরপর তিনজন পুলিশ আমাকে ধরে ফেলে। আমি তো ধরেই নিয়েছিলাম, আমাকে ওরা গুলি করে মেরেই ফেলবে, এ কথা ভেবে আমার পাশে থাকা নারী সহকর্মীর হাত চেপে ধরি। আমাকে তারা টেনে হিঁচড়ে নিয়ে চলে গেল। সেখান থেকে আট থেকে দশ হাত দূরে নিয়ে আমাকে দাঁড় করালো। এরপর সে বললো, এই তোরা এই শুয়োরের বাচ্চাটারে দেখে রাখিস। পরে আমি তাদের পাশে দাঁড়াই। এক পর্যায়ে চোখ ফাঁকি দিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে চলে যাই। এরপর তারা (পুলিশ) চলে যায় শহীদ মিনারের দিকে। 

এমআইকে/এআর