নিজস্ব প্রতিবেদক
০৫ আগস্ট ২০২৫, ০১:২৫ পিএম
জুলাই গণঅভ্যুত্থান উপলক্ষে আয়োজিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ অনুষ্ঠানের প্রথম ধাপের সাংস্কৃতিক আয়োজন চলছে মানিক মিয়া এভিনিউতে। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে অনুষ্ঠান চলাকালীন হঠাৎ করেই মঞ্চে প্রবেশ করে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ পর্যবেক্ষণ টিম। যারা মঞ্চের সকল উপকরণ উল্টে-পাল্টে দেখেন। ডিজিটাল ডিভাইস দিয়ে পুরো মঞ্চ পর্যবেক্ষণ করেন। অনুষ্ঠান শুরুর আধাঘণ্টা পর এমন দৃশ্য নজর কাড়ে সবার।
দেখা যায়, টিমের সদস্যরা প্রথমেই মঞ্চের বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে পর্যবেক্ষণ করেন। স্টেজের নিচ থেকে শুরু করে উপরের আলো, সাউন্ড, এলইডি স্ক্রিন পর্যন্ত সব যন্ত্রপাতি উল্টে-পাল্টে দেখা হয়। ড্রোন শো এবং সন্ধ্যার ব্যান্ড পারফরম্যান্স উপলক্ষে প্রযুক্তিগত অনেক সরঞ্জাম থাকায় এগুলোর ভেতর কোনো বিস্ফোরক বা সন্দেহজনক বস্তু আছে কি না? তা চেক করে সেনা সদস্যরা। ব্যবহার করা হয় উন্নত মানের ডিজিটাল স্ক্যানিং ডিভাইস।
মঞ্চের পেছনে রাখা ব্যাকআপ ডিভাইস, জেনারেটর, লাইট কন্ট্রোল ইউনিট এবং ক্যাবল সংযোগের প্রতিটিই তারা আলাদাভাবে পরীক্ষা করেন। উপস্থিত দর্শক ও আয়োজকদের মধ্যে এ সময় কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখেন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যরা।
জানা যায়, এটি ছিল পূর্ব পরিকল্পিত একটি নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ। সেনাবাহিনীর একটি বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট মূলত যেকোনো সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতেই এই চূড়ান্ত পর্যবেক্ষণ চালিয়েছে। বিশেষত, বিকেল ৫টায় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষণাপত্র পাঠ এবং সন্ধ্যার ড্রোন শো ঘিরে নিরাপত্তার মাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখা হয়েছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ বা সন্দেহজনক উপাদানের খোঁজ মেলেনি। অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এই পর্যবেক্ষণ একটি রুটিন কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
দর্শকদের অনেকে এই নজিরবিহীন পর্যবেক্ষণকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। তারা বলছেন, দেশের বর্তমান বাস্তবতায় এমন নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রয়োজন। অন্তত আমরা নিশ্চিন্তে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারছি।
জুলাই আন্দোলনের আত্মত্যাগ ও আদর্শকে ঘিরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা নিয়ে এই বাড়তি সতর্কতাই প্রমাণ করে, ইতিহাস শুধু স্মরণ নয়- সুরক্ষাও চায়।
এদিকে, শুধু মঞ্চ নয়, আশেপাশের পুরো এলাকায় সেনাবাহিনীর কঠোর নজরদার রয়েছে। রয়েছে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা তৎপরতাও।
এমআই/জেবি