নিজস্ব প্রতিবেদক
৩১ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩৩ পিএম
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ঘোষিত সীমানা পুনর্র্নিধারণের খসড়ায় বাগেরহাট জেলার একটি আসন বাদ পড়ায় স্থানীয় পর্যায়ে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এ ঘটনায় আসন পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত আপত্তি জমা দিয়েছেন বিএনপির অঙ্গসংগঠন তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা কাজী মনিরুজ্জামান মনির।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রস্তাবিত সীমানা নিয়ে আপত্তি তুলে ধরেন তিনি। বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল রাখার দাবি জানিয়ে আবেদনও করেছেন।
বাগেরহাট-৪ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী কাজী মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বাগেরহাটবাসী খুবই অভাগা। আমাদের একটি আসন ‘নাই’ হয়ে গেছে। বাগেরহাটে আমার জন্মলগ্ন থেকে চারটি আসন। বাগেরহাট-৪ আসন যেটা নাই হয়ে গেছে, সেখান থেকে আমি এসেছি। এ আসনটি বহাল রাখার জন্য সিইসির কাছে দাবি জানিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘শুধু ভোটারের উপর ভিত্তি করে যদি আমাদের ওখানে একটা আসন কেটে দেওয়া হয়, তাহলে আমরা একেবারে অনুন্নত থাকব। আমাদের এই উন্নয়ন সুবিধাটা হবে না। বাগেরহাটে চারটি আসন রাখতে বলেছি আমরা।’
কাজী মনির বলেন, ‘কেউ যদি এখন দ্রুত কোনো মামলা করে, আইনের ব্যবস্থা নেয়, তাহলে নির্বাচন প্রক্রিয়াটা থেমে যাবে। মানুষের যে আশা আকাঙ্ক্ষা ভোটাধিকার, সেটা তারা প্রয়োগ করতে পারবে না। যেকোনো লোক এখন এটা করতে পারে। সবাইকে তো বোঝানো যাবে না। এক একটা আসনে ১৭-১৮ জন এমপি প্রার্থী বিভিন্ন দলের। এটা করলে যদি হ্যাং হয়ে যায়, তাহলে দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সমস্যা হয়ে যাবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সিইসি নিয়ম মেনে সীমানা নিয়ে আবেদন করার পরামর্শ দেন। ইসি শুনানি করে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।’
এদিকে ইসির প্রস্তাবিত সীমানা নিয়ে আপত্তি জানানো শুরু হয়েছে। বাগেরহাটে বুধবার রাতেই স্থানীয়রা ক্ষোভ দেখিয়েছে। বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে সংক্ষুব্ধরা সিইসির সঙ্গেও ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ শুরু করেছেন। তাদের মধ্যে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় দুজন নেতা। নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করছেন কয়েকজন।
বুধবার নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আমরা ৬৪ জেলার গড় ভোটার নির্ধারণ করেছি ৪ লাখ ২০ হাজার ৫০০। এটা ধরে উপরের জেলায় একটি আসন বাড়ালে তা গাজীপুরে হবে। এ গড়ের কম বাগেরহাটে একটি কমালে সমতা চলে আসে। বাকিগুলোয় আসন কমবেশি প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। ৩৯টি আসনে অ্যাডজাস্টমেন্ট রয়েছে।’
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বুধবার ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা পুননির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এতে ভোটার সংখ্যার সমতা আনতে গাজীপুরে একটি আসন বাড়িয়ে ছয়টি এবং বাগেরহাটে চারটি থেকে কমিয়ে তিনটির প্রস্তাব করা হয়।
ছোটখাটো পরিবর্তন আনা হয়েছে ৩৯টি আসনে। খসড়া প্রকাশের পর দাবি-আপত্তি জানানোর সুযোগ রয়েছে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর শুনানি করে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি।
বাগেরহাটে আগে চারটি আসন ছিল- বাগেরহাট-১ (মোল্লারহাট-ফকিরহাট-চিতালমারি), বাগেরহাট-২ (গেরহাট সদর এবং কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল এবং মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোড়েলগঞ্জ এবং সরণখোলা)।
এবার বাগেরহাট-১ আগের মতো বহাল রাখা হয়েছে। বাগেরহাট সদর, কচুয়া, রামপাল নিয়ে বাগেরহাট-২ আসন এবং মোংলা, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ প্রস্তাব করা হয়েছে।
এমএইচএইচ/এএইচ