জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২৩ জুন ২০২২, ০৪:০৬ পিএম
পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে যারা সংশয় প্রকাশ করেছেন তাদের বেশিরভাগই আমন্ত্রণ পাচ্ছেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। শুধু তাই নয়, পদ্মা সেতু নিয়ে সরকারের তরফে যার দিকে ষড়যন্ত্রের সবচেয়ে বড় অভিযোগ সেই নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে সেতু বিভাগ। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি শনিবারের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ড. ইউনূসকে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জমকালো আয়োজনের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করেছেন।
এদিকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস যাবেন কি না জানতে চাইলে ইউনূস সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক লামিয়া মোর্শেদ গণমাধ্যমকে বলেন, এ বিষয়ে তিনি তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন। এরপর হয়তো সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন।
একই দিনে বিএনপির সাত নেতাকে অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হলেও আলাদা করে দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
সেতু বিভাগের পরিচালক (প্রশাসন) রুপম আনোয়ার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য সাড়ে তিন হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এর মধ্যে আছেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিদেশি কূটনৈতিক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকসহ অনেকে।
বিদেশিদেরও আমন্ত্রণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিদেশি অতিথিদের মধ্যে আছেন পদ্মা সেতু তৈরিতে যারা বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়া আমাদের বিদেশি কর্মী যারা এই সেতু তৈরিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তারা আমন্ত্রিত হিসেবে থাকবেন।
সেতু বিভাগের এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিএনপির সাত নেতাকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে চিঠি দিয়ে। খালেদা জিয়াকে আলাদা করে কোনো আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয়নি। আর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে যে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে সেটি বুধবারই রিসিভ হয়েছে।
অবশ্য বিএনপির পক্ষ থেকে অনেকটা আনুষ্ঠানিকভাবে বলে দেওয়া হয়েছে তারা পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেউ যাবেন না।
বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন ফিরিয়ে নেওয়ার পর দেশের টাকায় প্রমত্তা পদ্মার বুকে গড়ে উঠেছে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতু। ২৫ জুন সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে পদ্মাপাড়ে। এতে প্রায় ৮-১০ লাখ লোকের সমাগম হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতু উদ্বোধন করবেন। এর পরদিন সেতুতে যানবাহন চলাচল করবে। পদ্মা সেতু নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া আর ড. ইউনূস দুজনেরই তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর নির্মাণ পরিকল্পনার প্রথম দিন থেকেই ষড়যন্ত্র চলছে। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে বলে মিথ্যা অপবাদ আমাদের দিয়েছিল। দুর্ভাগ্য, আমাদের একজন স্বনামধন্য মানুষ, যাকে আমি সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা দিয়েছিলাম। সেই ড. ইউনূস বেইমানি করেছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে থাকতে না পেরে তিনি এ কাজ করেছেন। '
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম যে, দুর্নীতির প্রমাণ করতে হবে। পরে কানাডার আদালতে এটা ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু ড. ইউনূসের প্ররোচনায় বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ায়।’
পদ্মা সেতুকে জোড়াতালির বলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সেতুর ওপর থেকে পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়ার এবং টাকা বন্ধের চেষ্টা করায় ড. মুহম্মদ ইউনূসকে পদ্মা নদীতে চুবানোর কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিইউ/জেবি