নিজস্ব প্রতিবেদক
২৯ জুলাই ২০২৫, ০২:৪৫ পিএম
জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা কীভাবে দেশ ছেড়ে পালাতে সক্ষম হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তার মতে, শুধু হত্যাকারীরা নয়—তাদের সহযোগী ও সমর্থকরাও এখনো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অবস্থান করছে। ফলে এ ধরনের অপরাধীরা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
সোমবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ‘জুলাই গণহত্যার বিচার, আলোচনা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শন’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, অভিযুক্তদের অনুপস্থিতিতে বিচার হবে, রায়ও হবে—তবে তারা সত্যিকারের বিচারের মুখোমুখি হবে না। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কিছু অপরাধী সাজা পেলেও বেশিরভাগই থেকে যাবে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। তাই বিচার নিয়ে আরও গভীরভাবে ভাবতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই হত্যাকাণ্ড শুধু বিচ্ছিন্ন কোনো অপরাধ নয়। এটি ছিল একটি সংগঠিত ও পরিকল্পিত গণহত্যা। এর সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিল, যারা নির্দেশনা দিয়েছিল, এমনকি যারা এসবের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল—তাদের সবার বিচারের আওতায় আসা জরুরি।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন না এলে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন সম্ভব নয়। আমাদের রাজনীতিবিদদের দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় স্বার্থে কাজ করতে হবে। অন্যথায় এমন ভয়ংকর ঘটনা বারবার ঘটতে থাকবে, আর বিচার অসম্পূর্ণই থেকে যাবে।
অনুষ্ঠানে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। একইসঙ্গে ২০২৪ সালে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহতদেরও স্মরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে ‘ট্রায়াল অব জুলাই কার্নেজ’ শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়, যেখানে হত্যাকাণ্ডের পটভূমি, প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তার বক্তব্যে পরিষ্কারভাবে বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুধু বিচারের কাঠগড়ায় রায় ঘোষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। বরং, যারা এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিল, যারা পালাতে সহায়তা করেছে, এবং যারা এখনো ক্ষমতার আশ্রয়ে আড়ালে আছে—তাদেরও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
এইউ