images

জাতীয়

খুকৃবির সাবেক ভিসিসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:০৩ পিএম

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ঘুষ, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রহমান খানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগে বলা হয়েছে, অযোগ্য প্রার্থীদের অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়ে যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করেছেন অভিযুক্তরা।

রোববার (২৭ জুলাই) দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-পরিচালক সুমিত্রা সেন বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রহমান খানকে। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ সিন্ডিকেট পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা নিয়োগের শর্ত লঙ্ঘন করে লিখিত পরীক্ষায় অকৃতকার্য প্রার্থীদের কৃতকার্য দেখান এবং ভুয়া কাগজপত্র, সুপারিশ ও স্বাক্ষরের মাধ্যমে নিয়োগ বোর্ডের প্রতিবেদন জাল করেন। এতে করে প্রকৃত মেধাবী প্রার্থীরা নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হন এবং সুনির্দিষ্ট যোগ্যতাহীন ব্যক্তিদের সরকারি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দীন, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মুরাদ বিল্লাহ, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট আনিসুর রহমান রিন্টু, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ ও খায়রুল বাসার রিয়াজ, কম্পিউটার অপারেটর মো. মাসুদ রানা ও শাহরীন ইসলাম মীম, ল্যাব টেকনিশিয়ান রীনা খাতুন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট এ বি এম আরিফুল ইসলাম তুরান ও মো. শহিদুল ইসলাম, ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট মো. আসিফ আহমেদ, দিদারুল আলম ও মো. হাবিবুর রহমান এবং অফিস সহায়ক মো. ওয়াহিদুজ্জামান ও আছিয়া খাতুনকে।

এজাহারে আরও বলা হয়, ড. শহীদুর রহমান খানসহ এই সিন্ডিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পছন্দসই প্রার্থীদের সুবিধা দিতে নানা ধরনের অনিয়ম করেন। ভুয়া স্বাক্ষর সংযোজন, সুপারিশ তৈরি, ফলাফল পরিবর্তন এবং নির্ধারিত যোগ্যতা ছাড়াই চাকরি প্রদানের মতো গুরুতর অপরাধের প্রমাণ পাওয়ার পরই মামলার উদ্যোগ নেয় দুদক।
এই মামলায় দণ্ডবিধির ৪২০ (প্রতারণা), ৪৬৭ (জাল দলিল সৃষ্টির চেষ্টা), ৪৬৮ (প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি), ৪৭১ (জাল কাগজপত্র ব্যবহার) ও ১০৯ (অপরাধে সহযোগিতা) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক সূত্র বলছে, অভিযোগপত্র যাচাই-বাছাই ও সাক্ষ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে— নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির মাধ্যমে প্রভাব খাটিয়ে যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসব অনিয়মে সাবেক উপাচার্য সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।

এই বিষয়ে অভিযুক্তদের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। তবে দুদক জানিয়েছে, তদন্তের পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এবং দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমআই/এফএ