images

জাতীয়

পর্যবেক্ষক সংস্থাকে ইসিতে আবেদন করতে হবে ১০ আগস্টের মধ্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ জুলাই ২০২৫, ০২:৩৭ পিএম

নিবন্ধনপ্রত্যাশী স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার কাছে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ১০ আগস্টের মধ্যে ইসির সিনিয়র সচিব বরাবর আবেদন করতে বলা হয়েছে।

রোববার (২৭ জুলাই) ইসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে নিবন্ধিত ৯৬টি স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’ এর ধারা ১৬ মোতাবেক স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়েছে। ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’ অনুসারে ‘পর্যবেক্ষক সংস্থা’ হিসেবে নিবন্ধনে আগ্রহী যোগ্যতাসম্পন্ন বেসরকারি সংস্থাসমূহের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হচ্ছে। নিবন্ধনে আগ্রহী সংস্থাসমূহকে আগামী ১০ আগস্ট (রোববার) বিকেল ৫টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব বরাবর স্থানীয় পর্যবেক্ষক নিবন্ধনের আবেদন ফরম (EO-1) এ আবেদন দাখিল করতে হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি এবং আবেদন ফরম (EO-1) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনসংযোগ শাখায় (কক্ষ নং-১০৫) এবং নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট www.ecs.gov.bd -তে পাওয়া যাবে।

পর্যবেক্ষক হতে যা যা দিতে হবে

> আবেদনকারী সংস্থাকে বাংলাদেশের কোনো আইনের অধীনে নিবন্ধিত হতে হবে;

> গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে কাজ করে আসছে এবং যাদের নিবন্ধিত গঠনতন্ত্রের মধ্যে এই সব বিষয়সহ সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান বিষয়ে নাগরিকদের মধ্যে তথ্য প্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণের অঙ্গীকার রয়েছে কেবল সেই সব বেসরকারি সংস্থাই নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবে;

> রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন বা আছেন কিংবা নিবন্ধন লাভের জন্য আবেদনকৃত সময়ের মধ্যে কোনো নির্বাচনের প্রার্থী হতে আগ্রহী এইরূপ কোনো ব্যক্তি যদি পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদনকারী কোনো সংস্থার প্রধান নির্বাহী কিংবা পরিচালনা পর্ষদের বা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হয়ে থাকেন, তা যে নামেই অভিহিত হোক না কেন ওই সংস্থাকে পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন করা হবে না;

> আবেদনকারী সংস্থার প্রধান নির্বাহী কিংবা পরিচালনা পর্ষদের বা ব্যবস্থাপনা কমিটির কোনো সদস্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় মর্মে আবেদনের সাথে লিখিত হলফনামা জমা দিতে হবে;

> নির্বাচন কমিশনে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক এমন কোনো প্রতিষ্ঠান যার নামের সঙ্গে জাতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের নামের হুবহু মিল রয়েছে অথবা কাছাকাছি নাম ব্যবহার করা হয়েছে, যাহা দ্বারা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে; এমন প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনে পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে;

> নির্বাচন কমিশনে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক এমন কোনো প্রতিষ্ঠান যার নামের সঙ্গে আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক কোনো প্রতিষ্ঠানের নামের হুবহু মিল রয়েছে অথবা কাছাকাছি নাম ব্যবহার করা হয়েছে, যা দ্বারা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে এমন প্রতিষ্ঠানকে ওই আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক সংস্থা হতে লিখিত অনাপত্তিপত্র আবেদনের সঙ্গে দাখিল করতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

> সংস্থার গঠনতন্ত্র (নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত হতে হবে);

> সংস্থার বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ড/পরিচালনা পর্ষদ/কার্যনির্বাহী কমিটির তালিকা (নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত);

> সংস্থার নিবন্ধন সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি (প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক);

> সংস্থার নিবন্ধিত অফিসের নাম ও ঠিকানা (পরিবর্তন হলে তার স্বপক্ষে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন থাকতে হবে);

আরও পড়ুন

আগামী নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে, জানিয়ে দিলেন সিইসি

আগামী নির্বাচনে অস্ত্রের চেয়েও যে ভয়াবহ হুমকির কথা জানালেন সিইসি

> নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের নাম ও ঠিকানা;

> নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত কার্যাবলীর তালিকা;

> সর্বশেষ দুই বছরের সম্পাদিত কার্যক্রমের বার্ষিক প্রতিবেদন;

> দেশীয়/আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সম্পর্ক থাকলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার অনাপত্তিপত্র;

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০২৩ সালের নীতিমালা বাতিল ও তৎকালীন ৯৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করে নতুন নীতিমালা জারি করে নাসির উদ্দিন কমিশন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৯৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়া হয়। কিন্তু ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর নিবন্ধন বিষয়ে বিদ্যমান নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামীতে নতুন নীতিমালা অনুযায়ী পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধিত করা হবে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন করে গণবিজ্ঞপ্তির উদ্যোগ নিলো নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পর্যবেক্ষক নিবন্ধন প্রথা শুরু করে ইসি। সে সময় ১৩৮টি সংস্থা নিবন্ধন পেয়েছিল। ওই নির্বাচনে দেশি পর্যবেক্ষক ছিল ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ২০১৪ সালে ৩৫টি সংস্থার ৮ হাজার ৮৭৪ জন পর্যবেক্ষক ভোট দেখেছেন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১৮টি নিবন্ধিত সংস্থার মধ্যে ৮১টি দেশি সংস্থার ২৫ হাজার ৯০০ জন পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৯৬টি নিবন্ধিত সংস্থার মধ্যে ৮০টির মতো সংস্থার ২০ হাজার ২৫৬ জন ভোট দেখেছেন।

এমএইচএইচ/জেবি