নিজস্ব প্রতিবেদক
২১ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৮ পিএম
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় রাষ্ট্রীয় শোক পালনের পাশাপাশি জুলাই ‘পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠানমালা ২০২৫ এর সব অনুষ্ঠান আগামী তিন দিনের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সোমবার (২১ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ শোকাবহ ঘটনার প্রেক্ষাপটে জুলাই 'পুনর্জাগরণ' অনুষ্ঠানমালা ২০২৫ এর সকল অনুষ্ঠান আগামী তিন দিনের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হলো।
এদিকে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে এবং আহত হয়েছেন ১৭১ জন। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে দুর্ঘটনা ঘটার পর দিনভর উদ্ধার কাজ চালায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
আইএসপিআর জানিয়েছে, এ ঘটনায় আহত ও নিহতরা উত্তরার বিভিন্ন হাসপাতালে আছেন। এর মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৮ জন আহত, জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে আহত ৭০ জন ও নিহত ২ জন, ঢাকা মেডিকেলে আহত ৩ জন, নিহত ১ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) আহত ১৭ জন ও নিহত ১২ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হসপিটালে আহত ১ জন ও নিহত ২ জন, লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে আহত ১১ জন ও নিহত ২ জন, উত্তরা আধুনিক হসপিটালে আহত ৬০ জন ও নিহত ১ জন এবং উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে একজন আহত ভর্তি আছে।
এর আগে, সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমান বাহিনীর ‘এফ-৭ বিজিআই’ মডেলের একটি বিমান উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই উত্তরার মাইলস্টোন কলেজের একটি ভবনে আছড়ে পড়ে। প্রচণ্ড শব্দ আর আগুনের গোলায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ক্লাস চলাকালীন দুর্ঘটনা ঘটায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দেয় ব্যাপক বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক।
দুর্ঘটনার সময় কলেজে প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস চলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ ও আগুনে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ে, কেউ শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে।
এই দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট এবং তাদের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার কাজ শুরু করে। এ সময় হতাহতদের উদ্ধার করা সিএমএইচ, কুর্মিটোলা হাসপাতাল, বার্ন ইনিস্টিটিউট, ঢাকা মেডিকেলসহ উত্তরা বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিস ৯টি ইউনিট প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করে। এর পাশাপাশি চলে হতাহতদের উদ্ধারকাজ। পরে দুপুর ২টা ২৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে পর্যায়ক্রমে বিধ্বস্ত বিমানটির অংশবিশেষ স্কুল ভবন থেকে ক্রেনের মাধ্যমে সরানো হয়।
এমএইচটি