মোস্তফা ইমরুল কায়েস
২১ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৪ পিএম
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমানটি প্রথমে মাঠে আছড়ে পড়ে। পরে এটি ৩০ গজ গর্ত করে সামনে এগিয়ে যায়। এটি প্রতিষ্ঠানটির দুই তলা বিশিষ্ট একটি ভবনের নিচতলায় গিয়ে আঘাত করে। বিমানটি নিচতলার একটি কক্ষে ঢুকে যায়।
সোমবার (২১ জুলাই) রাতে ঢাকা মেইলকে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের সিনিয়র স্টাফ অফিসার শাহজাহান সিকদার।
ফায়ার কর্মকর্তা বলেন, বিমানটি কলেজ মাঠে আছড়ে পড়ে। এরপর সেটি প্রায় ৩০ গজ গর্ত করে ভবনে গিয়ে আঘাত করে। তখন ভবনটির পাশে থাকা সিঁড়ি দিয়ে হয়ত শিক্ষার্থীরা নামছিল। ফলে হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে।
এদিকে কলেজটির স্কুল শাখার কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বিমানটির অর্ধেক বাহিরে এবং অর্ধেক মাঠের অংশে পড়েছিল। বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই সেটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে যায়। তবে ওই সময়ই সেটিতে আগুন লাগে। ফলে ভবনটির সিঁড়ি বেয়ে গেট দিয়ে যারা বের হচ্ছিল তারাই বেশি ক্ষতির মুখে পড়ে।

তখনকার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা তো ক্লাসে টেস্ট দিচ্ছিলাম। ফলে বিকট শব্দের কারণে বের হয়ে আসি। পরে পরীক্ষাও বাদ হয়ে যায়। আমরা বাইরে এসে দেখি স্কুলের মাঠে অনেকে পড়ে আছে। বিমানটিতে আগুন জ্বলছে। আগুনে অনেকে দগ্ধ হয়ে কাতরাচ্ছে।
তারা আরও বলেন, বিমানটির মাথাটা ছিল স্কুল ভবনের নিচতলার একটি রুমে। ফলে বেশি আহত হয়। আহতদের বেশির ভাগ ছোট শিশু। ওই সময় স্কুল ছুটি হচ্ছিল। আগে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের ছুটি দেওয়া হয়েছিল। স্কুল আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। তখন তাদের কোচিং চলছিল।
তারা জানিয়েছে, আঘাতপ্রাপ্ত ভবনটির পাশে ছিল শিশুদের খেলার দোলনা। কেউ কেউ তখন দোলনায় দোল খাচ্ছিল। কয়েকজন রাইডসে চড়ে মজা করছিল। তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনার মাত্র তিন থেকে চার মিনিটের মাথায় ফায়ার সার্ভিসের টিম ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছুটে আসেন। এজন্য বেশির ভাগ আহতকে দ্রুত সময়ে হাসপাতালে ভর্তি করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।

তাদের ভাষ্য, আহতদের অনেকে তখন পুড়ে গিয়েছিল। সাহায্যের জন্য কাতরাচ্ছিল। কিন্তু কিছু করার ছিল না তাদের।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, এই ঘটনার পর তাদের ক্লাস থেকে আধা ঘণ্টা বের হতে দেওয়া হয়নি। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে তাদের বের করে দেয়। ঘটনা ঘটে দুপুর ১টা ৫ মিনিটে। তারা দেড়টারও পর পর্যন্ত সেখানে আটকা ছিল। কারণ প্রধান গেট ছিল বন্ধ।
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার সবশেষ তথ্য অনুযায়ী ২০ জন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। আর আহত হয়েছেন ১৭১ জন। হতাহতদের বেশির ভাগই স্কুলের শিশু শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
এমআইকে/জেবি