images

জাতীয়

গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা কত?

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩৮ পিএম

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে দিনভর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে। সংঘর্ষে ঠিক কতজন নিহত হয়েছেন সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিভিন্ন গণমাধ্যম স্থানীয় সূত্রে দুইজন থেকে চারজন নিহতের সংখ্যা উল্লেখ করছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

বুধবার (১৬ জুলাই) দেশব্যাপী জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে নতুন দল এনসিপি গোপালগঞ্জে কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। এই কর্মসূচি ঘিরে গতকাল থেকেই উত্তেজনা দেখা দেয়। আজ সকাল থেকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এনসিপির কর্মসূচি ঠেকাতে তৎপর ছিলেন। তারা এনসিটির সমাবেশস্থলে হামলাও চালান। সকালে পুলিশ ও ইউএনওর গাড়ি জ্বালিয়ে দেন।

বাধা উপেক্ষা করেই দুপুরে এনসিপি তাদের নির্ধারিত সমাবেশ সংক্ষেপে সম্পন্ন করে। এরপর দলটির নেতারা ফিরে যাওয়ার সময় তাদের গাড়িবহরে হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ। এতে গোপালগঞ্জ পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। এনসিপি নেতারা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। সেখানে কয়েক ঘণ্টা আবদ্ধ থাকার পর তারা সেনাবাহিনী ও পুলিশের পাহারায় গোপালগঞ্জ ছাড়েন।

Gopalgonj

বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়, সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত অনেকে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে গেলেও তাদের সঠিক সংখ্যা এখনো জানা যায়নি।

গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেশ বিশ্বাস সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে বিবিসি বাংলাকে জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের মরদেহ সদর হাসপাতালে এসেছে। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এদিকে কোনো কোনো গণমাধ্যম সংঘর্ষে দুইজন আবার কেউ কেউ তিনজন মারা যাওয়ার সংবাদ দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও তাদের ফেসবুক পেইজে কয়েকজন মারা যাওয়ার দাবি করা হচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো হতাহতের ব্যাপারে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

Gopalgonj2

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত আটটা থেকে গোপালগঞ্জে ২২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হচ্ছে। দিনেই জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আগে থেকেই সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি পুলিশ সদস্যরা ধৈর্যের সঙ্গে সামলানোর চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. বাহারুল আলম। সেখানে কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার হয়নি বলেও দাবি করেছেন তিনি।

বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে বিবিসি বাংলার সঙ্গে আলাপকালে আইজিপি বলেন, উচ্ছৃঙ্খলতা যা হয়েছে, সেটা যতটুকু সম্ভব আমরা ধৈর্যের সঙ্গে প্রশমন করার চেষ্টা করছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আরও পুলিশ সদস্য পাঠানোর কাজ করছি। আমরা লিথ্যাল (প্রাণঘাতী অস্ত্র) কোনো কিছু ব্যবহার করছি না, তাই একটু সময় লাগছে।

Gop2

সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির সমাবেশে হামলায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করা হয়েছে। দিনভর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসাও করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।

জেবি