নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ জুন ২০২২, ০৮:৫২ পিএম
প্রবল বৃষ্টিপাতে ও উজানের পাহাড়ি ঢলে দেশে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রায়ই বন্যা দেখা দিচ্ছে। তবে এবারের বন্যার পেছনে ভূমি ব্যবহার পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক হাওর-বাঁওড়, নদ-নদী এলাকাসহ বিভিন্ন জলাশয়-জলাভূমির পানি ধারণক্ষমতা হ্রাসসহ স্বাভাবিক পানি প্রবাহের গতি-প্রকৃতি পরিবর্তনকে দায়ী করছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)। সেই সাথে বাংলাদেশসহ ভারতের আসাম, মেঘালয়, চেরাপুঞ্জির অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের বড় দায়ী রয়েছে সংস্থাটি।
সোমবার (২০ জুন) গণমাধ্যেমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব বিষয় তুলে ধরে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি হয়েছে। এতে জীবন-জীবিকার অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতিসহ জনগণের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বন্যায় এই মুহূর্তে দুর্যোগ মোকাবেলায় ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতায় স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সাধারণ জনগণ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বলছে, দেশের শস্যভাণ্ডর ও মৎস্যের উৎস উত্তরাঞ্চলীয় হাওর এলাকাতেও প্রাকৃতিক জলাভূমি, হাওর-বাঁওড়-খাল-বিল নির্বিচারে ধ্বংস করে সড়ক-অবকাঠামো ও বসতবাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। নগর এলাকাতে প্রাকৃতিক খাল, জলাধার ক্রমশ ধ্বংস করা এবং যথাযথ আইনের শাসনের অভাবে সারাদেশেই নদী দখল, জলাশয়-জলাভূমি ভরাট চলছে নির্বিচারে। একইসাথে আমাদের নদীগুলোর নাব্যতা সংকটের কারণে পানির ধারণক্ষমতাও কমেছে মারাত্মকভাবে।
নদীগুলোতে ড্রেজিং প্রকল্পে সরকারি ব্যয়কৃত অর্থ প্রকৃত অর্থে নদীগুলোর নাব্যতা বাড়াতে কতটুকু ভূমিকা রাখে তা নিয়ে প্রশ্ন রেখে আইপিডি বলছে, কেবল যত্রতত্র বাঁধ নির্মাণ এবং নির্বিচার নদীশাসন ও কৃত্রিম ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমাদের বন্যা-জলাবদ্ধতা ও জনদুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নয়। আমাদের বাঁচতে হলে সামনের দিনগুলোতে আমাদের হাওর-বাঁওর, নদী-খাল, জলাশয়-জলাভূমি প্রভৃতি প্রাকৃতিক জল ধারণ এলাকা আমাদের সংরক্ষণ করতেই হবে। সেই সাথে দখল-ভরাটের সাথে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার দাবি করে আইপিডি।
আইপিডি জানায়, আবহাওয়া ও জলবায়ুর পূর্বাভাস অনুযায়ী, এবছর সারা দেশেই দীর্ঘস্থায়ী বন্যার আশংকা করা হচ্ছে। যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামী বছরগুলোতেও নিয়মিতভাবে দেখা দিতে পারে । আমাদের দেশ মৌসুমী বায়ুর অঞ্চল হওয়াতে বন্যার সাথে বসবাস করবার জন্য যে ধরনের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হওয়া কথা ছিল, সেই মূলনীতি থেকে সরে গিয়ে আমরা প্রাকৃতিক পানিপ্রবাহ ও জলধারণ এলাকা নষ্ট করে চলেছি প্রতিনিয়ত।
ডিএইচডি/জেবি