নিশীতা মিতু
২০ জুন ২০২২, ১২:৫১ পিএম
অপেক্ষার দিন শেষ হলো বলে। আর মাত্র চার দিন পরেই পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বপ্নের এই সেতুকে ঘিরে মানুষের মনে কৌতূহলের শেষ নেই।
গুগলে পদ্মা সেতু লিখে সার্চ দিলেই পাওয়া যায় অনেক ছবি। এসব ছবির সবগুলোর মধ্যে মিল থাকলেও ভিন্ন একটি ছবিতে সবার চোখ আটকাবে।
অসংখ্যবার পদ্মা সেতু সংক্রান্ত খবরে এই ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে। অন্য ছবিগুলোর চেয়ে এই ছবিটি ভিন্ন। স্বাভাবিকভাবেই মনে প্রশ্ন জাগে, সত্যিই কি এটি পদ্মা সেতুর ছবি?
দুঃখজনক হলেও সত্যি এই যে, এটি পদ্মা সেতুর ছবি নয়। বাংলাদেশের গর্ব পদ্মা সেতুর ছবি হিসেবে ব্যবহার করা একটি ভুল ছবি। বাস্তবে এই সেতুটির অবস্থান জাপানে। ভিনদেশি সেতুটি অপপ্রচারের মাধ্যমে জড়িয়ে গিয়েছে আমাদের পদ্মা সেতুর সঙ্গে।
বহু চ্যালেঞ্জ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণে সফল হয়েছে। ইতোমধ্যে এই সেতুর মূল ছবি সবার কাছে দৃশ্যমান। পদ্মা সেতু মূল স্ট্রাকচারে রূপ পাওয়ার আগেই বিদেশি সেতুর ছবিটি বিভিন্ন মাধ্যমে পদ্মা সেতু বলে প্রচার করে হয়েছে।
কেউ কেউ বলেছেন, এটি পদ্মা সেতুর অ্যানিমেটেড ছবি। অথচ একটু সময় নিয়ে ঘাঁটলেই গুগলে মেলে আসল উত্তর।
আসলে ছবিটি কীসের?
পদ্মা সেতুর নামে ভাইরাল হওয়া ছবিটি আসলে জাপানের ট্রান্স-টোকিও বে এক্সপ্রেসওয়ের। এটি টোকিও বে অ্যাকুয়ালাইন নামেও পরিচিত। টোকিও উপসাগরের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে এটি। মূলত একে সামুদ্রিক ক্রসিং বলা যায়। ১৫.১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ক্রসিংটি কানাগাওয়া প্রিফেকচারের কাওয়াসাকি শহরকে বোসো উপদ্বীপে চিবা প্রিফেকচারের কিসারাজু শহরের সাথে সংযুক্ত করেছে।
১৯৮৯ সালে টোকিও বে অ্যাকুয়ালাইনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরে এটি উন্মুক্ত করা হয়। গুগলে ‘Tokyo Bay Aqua Line’ বা ‘Trans-Tokyo Bay Expressway’ লিখে সার্চ দিলেই এই এক্সপ্রেসওয়ের ছবি পাওয়া যায়।
ভাইরাল হওয়া ছবিটি যে মিথ্যা তা বোঝার আরেকটি সহজ উপায় হলো পদ্মা সেতুর কাঠামোগত ছবিটি মনোযোগ দিয়ে দেখা। পুরো সেতুর ছবি বা ভিডিও দেখলে খেয়াল করবেন এতে ইউ টার্ন জাতীয় কোনো পথ নেই। ভাইরাল হওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ছবিতে একটি বড়সড় ইউ টার্ন দৃশ্যমান। অর্থাৎ এটি ভুল ছবি।
উল্লেখ্য, ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো হলো পদ্মা সেতু। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার। দ্বিতল এই সেতুর এক অংশ মুন্সিগঞ্জের মাওয়া এবং অপর অংশ শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যুক্ত। এ সেতুতে একই সঙ্গে রেল ও গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে। পদ্মা সেতুর নকশা করেছেন হংকংয়ের প্রকৌশলী ড. রবিন স্যাম।
এনএম/এজেড