images

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি: আলী রীয়াজ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৫ জুন ২০২৫, ০৭:৪০ পিএম

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শেষে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রিয়াজ জানিয়েছেন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল এনসিসি-এর পরিবর্তে নতুন কমিটির নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর মেয়াকাল ১০ বছর হওয়ার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।

বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের বৈঠক শেষে তিনি এই কথা জানান।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছরের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরতে গিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে সর্বশেষ বলা হয়েছে, সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য কোনো ধরনের কমিশন বা কমিটি তৈরি করা হলে তারা প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল ১০ বছরের বিষয়টি বিবেচনা করবে। এই আলোচনায় আমরা কোনোরকম ঐক্যমত পৌঁছাতে পারিনি। সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নিয়োগ কমিটির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারছি না ততক্ষণ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না।

তবে সবশেষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ১০ বছরের মেয়াদকাল নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে সেখানে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল স্বাগত জানিয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী আলোচনায় আমরা সবাই একমত হতে পারবো।

আরও পড়ুন

ন্যূনতম ছাড় দেওয়ার জায়গায় আসুন, রাজনৈতিক দলগুলোকে আলী রীয়াজ

‘বাহাত্তরের সংবিধানের ওপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠা পায় ফ্যাসিবাদী শাসন’

এনসিসির পরিবর্তে নতুন কমিটির নামের প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষ জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করার কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলে (এনসিসি) নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এনসিসির পরিবর্তে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন থেকে নতুন নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। এখন থেকে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কমিটির নাম বলা হয়েছে। এখানে তিনটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। এনসিসি যেসব নিয়োগের কথা বলা হয়েছে সেখা থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল ও তিন বাহিনীর প্রধানের নিয়োগের বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে সাংবিধানিক সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নিয়োগ দেবে। তৃতীয় যে পরিবর্তন এনসিসি থেকে সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে করা হয়েছে কাঠামোগত কারা সদস্য হবেন তা পরিবর্তন আনা হয়েছে।

Songlap
ঐকমত্য কমিশনে চলছে টানা আলোচনা। ছবি: সংগৃহীত

এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলেন, ঐকমত্য কমিশন থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নিয়োগ কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী-নিম্নকক্ষের স্পিকার, উচ্চকক্ষের স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা অন্যান্য বিরোধী দলের একজন প্রতিনিধি, রাষ্ট্রপতির একজন প্রতিনিধি, যিনি আইনের ধারা বিবেচিত হবেন এবং প্রধান বিচারপতির মনোনীত একজন আপিল বিভাগের বিচারপতি সদস্য হবেন। এর আগে এনসিসিতে প্রধান বিচারপ্রতি ও রাষ্ট্রপতির কথা বলা হয়েছে, সেক্ষেত্রে এটি থাকছে না। এই প্রস্তাবের ক্ষেত্রে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। আলোচনা শেষে যেটা লক্ষ্য করা গেছে, কিছু দল থেকে এটিকে স্বাগত জানানো হয়েছে। কিছু কিছু এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে।

আরও পড়ুন

জাতীয় সনদ তৈরিতে সবাই ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে, আশা আলী রীয়াজের

ঐকমত্য তৈরি হলে রোজার আগেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব: আলী রীয়াজ

জানা গেছে, এই বিষয়ে বিএনপি, এলডিপি, এনডিএম ও লেবার পার্টি ঘোর আপত্তি জানিয়েছে। তবে তারা এখানে আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছে৷ যেমন এই কমিটির কার্যক্রম কীভাবে, কার্যপরিধি কী হবে, এর জবাবদিহিতার ব্যবস্থা কী হবে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া কী হবে ইত্যাদি। ঐকমত্য কমিশন বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে আগামী সপ্তাহে একটি প্রস্তাব পেশ করবে।

আলী রীয়াজ বলেন, বিদ্যমান সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতি অটুট রাখার বিষয়ে কয়েকটি দল মতামত দিয়েছে। আবার কয়েকটি দল ভিন্ন মতামত দিয়েছে। ফলে পিসি এখন পর্যন্ত কোনো ঐকমত্য তৈরি হয়নি। তবে সাম্য মানবিক মর্যাদা, গণতন্ত্র, সামাজিক সুবিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্প্রীতি এবং পক্ষপাতহীনতা এই পাঁচটি বিষয় উল্লেখ করার পক্ষে অধিকাংশ দলের সম্মতি রয়েছে। ঐকমত্য কমিশন এ বিষয়ে আরও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আগামী সপ্তাহে পেশ করবে।

বিইউ/জেবি