images

জাতীয়

‘বন্যা থেকে রক্ষা পেতে পরিকল্পিত ড্রেজিং জরুরি’

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ জুন ২০২২, ১১:৩৭ এএম

কয়েক যুগের মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্যার কবলে পড়েছে সিলেট। বিভাগজুড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বন্যা পরিস্থিতি। প্রায় দুই মাসের ব্যবধানে তৃতীয় দফার বন্যায় সীমাহীন কষ্ট পোহাচ্ছেন জেলার মানুষ। বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার কারণ হিসেবে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ, রাস্তা ও স্লুইসগেট নির্মাণ, নদী ভরাটকে দায়ী করছেন অনেকে। তবে পানিসম্পদ ও জলবায়ুবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বন্যার জন্য সবচেয়ে বড় কারণে হিসেবে পরিকল্পনাভিত্তিক নদীর ড্রেজিং না করাকে দুষছেন।

ঢাকা মেইলের সঙ্গে একান্ত আলাপে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

আইনুন নিশাত বলেন, ‘কয়েকদিনের বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট ও নিচু জায়গা ডুবে গেছে। বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এখন বন্যার জন্য নদী ভরাট কিংবা খাল দখলকে দোষ দিয়ে কোনো লাভ নেই। আমরা দেখেছি হাজার কোটি টাকা খরচ করে নদী ড্রেজিং করা হচ্ছে। এই ড্রেজিংতো কোনো পরিকল্পনাভিত্তিক হচ্ছে না।’

flood-2পানিসম্পদ ও জলবায়ুবিষয়ক এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে আমরা বলে আসছি জলবায়ু পরির্বতন ও বৈশ্বিক উষ্ণতার বাড়ার কারণে হঠাৎ বেশি বৃষ্টি, আকষ্মিক বন্যাসহ নানা ঘটনা ঘটতে থাকবে। এসব ঘটনার জন্য আমি শুধু জলবায়ুকে দায় দিচ্ছি না। আমাদের প্রস্তুত থাকাও জরুরি।

আইনুন নিশাত বলেন, ‘তিন-চার বছর পর নদীর পানি বাড়ে। তাই শহর রক্ষা বাঁধ করতে হবে। কিন্তু সবচেয়ে বড় বিষয়, সিলেট-সুনামগঞ্জ শহরে বন্যা নিয়ন্ত্রণকারী কোনো বাঁধ নেই। কাজেই ওখানে কোনো প্রটেকশনও নেই। নদী কানায় কানায় ভর্তি হলেই শহরে পানি ঢুকছে। বন্যা হচ্ছে। আবার শহরের পানি নেমে যাওয়ার খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে। না হলে পানি নামবে কি করে?

flood-6

কীভাবে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব এমন প্রশ্নের জবাবে এই জলবায়ু বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এই বছর শুধু কুশিয়ারা-সুরমায় নয়, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীতেও পানি বাড়ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পূর্বাভাস অনুযায়ী আরও পাঁচ-ছয়দিন মানুষের ভোগান্তি হবে। তাই পরিস্থিতি অনুযায়ী দুর্যোগের ব্যবস্থা নিতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া বন্যার পূর্বাভাস নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে আগামী সাত দিনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মোট কথা, এসব নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। কারণ, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটবে।

বৃষ্টি চলতে থাকলে ঢাকাতেও বন্যা হবে

মুষলধারে এমন বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে রাজধানী ঢাকাতেও বন্যার প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন এই পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ।

flood-3

আইনুন নিশাত বলেন, সিলেটে-সুনামগঞ্জের বন্যার মূল কারণ অতিরিক্ত বৃষ্টি। মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গতকাল (শুক্রবার) বৃষ্টিপাত কম হলেও এর আগের তিন দিন আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ওই রকম বৃষ্টি হলে ঢাকা শহরের সচিবালয়ের তৃতীয় তলায়ও পানি উঠবে।

এসএএস/এমআর