images

জাতীয়

দুই দিনে আরও ১৭ জেলা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ জুন ২০২২, ০৮:৩১ পিএম

অব্যাহত বৃষ্টিপাত আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে আগামী দুই দিনের মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলের আরও ১৭টি জেলা প্লাবিত হতে পারে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

শনিবার (১৮ জুন) এক পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, ভারতের মেঘালয় ও আসামে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। ইতোমধ্যেই সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে হয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, সিলেট, সুনামগঞ্জ এলাকায় আজ শনিবার এবং আগামীকাল রোববারও (১৯ জুন) ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকবে। ফলে সেসব এলাকার বন্যার পানি আরও বাড়তে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। সেই সঙ্গে যমুনা নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে।

Flood

উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, এই সময়ে উত্তরাঞ্চলের আরও কিছু জেলা প্লাবিত হতে পারে। বন্যার এই পানি আবার নিচের দিকে নেমে এলে মধ্যাঞ্চলের কিছু জেলাও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সড়ক ডুবে যাওয়ায় সুনামগঞ্জের সঙ্গে আগেই সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, মোহনগঞ্জে রেলসেতু ভেঙে যাওয়ায় নেত্রকোনার সঙ্গেও রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়েছে।

এদিকে, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী- ভারতে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় তা দেশের কুড়িগ্রাম, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা থেকে প্রবেশ করে আরও এগিয়ে আসছে। ফলে জামালপুর, বগুড়া, শেরপুর, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও পাবনায় বন্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়া নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারেও বন্যা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি বন্যার পানি আরও নিচের দিকে নেমে এলে রাজবাড়ী, ফরিদপুর, শরীয়তপুরসহ আরও বেশ কয়েকটি এলাকাও প্লাবিত হতে পারে।

Flood

মেঘালয় ও আসামে ভারী বর্ষণ এই আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলছে। দেশটির আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে আরও ৫৫০ মিলিমিটার ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকবে। এর আগে গত তিন দিনে এখানে আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া আসামে বৃষ্টি হতে পারে ৩০০ মিলিমিটার। এরই মধ্যে ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা ১২২ বছরের মধ্যে রেকর্ড।

ফলে ওইসব এলাকার বৃষ্টির পানি সিলেট ও কুড়িগ্রাম দিয়ে নেমে আসবে। এতে মেঘালয় ও আসামে বৃষ্টি না কমা পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির আশা দেখছেন না আবহাওয়াবিদরা। এই কারণে সিলেট, কানাইঘাট, সুনামগঞ্জ ও দিরাইয়ের সুরমা নদী, কুড়িগ্রামের ধরলা, চিলমারির ব্রহ্মপুত্র, লরেরগড়ের জাদুকাটা, কলমাকান্দার সোমেশ্বরী নদীর পানি ছাড়াও নাকুয়াগাঁওয়ে ভোগাই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর পানিও বাড়ছে।

এ বিষয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির পানি দ্রুতগতিতে সুনামগঞ্জ ও সিলেট অঞ্চলে নেমে এসেছে। সে জন্য বন্যা অল্প সময়েই সিলেট অঞ্চলে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এছাড়া বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় দেশের উত্তরে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারীসহ কয়েকটি জেলাতেও আগামী কয়েকদিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। এছাড়া উত্তরের জেলাগুলোর পানি নামার সময় সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোতেও বন্যা হতে পারে।

টিএ/আইএইচ