images

জাতীয়

তেজগাঁও পশুর হাট: বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে গরুর মালিকরা

মাহাবুল ইসলাম

৩১ মে ২০২৫, ০৩:২০ পিএম

ঈদুল আজহার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। রাজধানী ঢাকায় বাড়ছে কোরবানির পশুর হাটগুলোর কার্যক্রম। দেশের নানা প্রান্ত থেকে খামারী ও ব্যাপারীরা গরু-ছাগল নিয়ে রাজধানীর পথে রওনা হয়েছেন। 

তবে চলতি মৌসুমে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বৃষ্টি। ভেজা পথে পশুবাহী যানবাহন থেকে শুরু করে হাট পর্যন্ত— প্রতিটি ধাপে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রাখাল ও গরুর মালিকরা।

রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠে গিয়ে দেখা গেল, হাট এখনো পুরোপুরি জমে না উঠলেও পশু নিয়ে হাজির হচ্ছেন ব্যাপারীরা। কাঁদা-পানিতে পা ডুবিয়ে হাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন গরুর মালিকরা। কেউ গরুর যত্ন নিচ্ছেন, কেউ খোঁজ নিচ্ছেন আশপাশে থাকার ও বিশ্রামের জায়গা সম্পর্কে। তবে সবার মুখেই একটা উদ্বেগ— বৃষ্টি যেন গরু বা মানুষকে অসুস্থ না করে ফেলে।

প্যারাসিটামলই ভরসা

সিরাজগঞ্জ থেকে গরু নিয়ে আসা খামারী মাজেদ আলী ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমরা গতকাল (শুক্রবার) রাতে রওনা দিয়েছি। অনেক কষ্ট করে ঢাকায় ঢুকেছি। রাস্তায় থেমে থেমে বৃষ্টি, গরু ভিজেছে, আমিও ভিজেছি। গায়ে কেমন একটা লাগছিল। তাই এসেই প্যারাসিট্যামল খেলাম। গরুগুলোকেও ওষুধ খাওয়াচ্ছি— যেন অসুস্থ না হয়। কারণ একবার অসুস্থ হলে বিক্রি করা যায় না।’

শুধু মাজেদ আলী নন, অনেক গরুর মালিক ও রাখাল এখন অসুস্থতা ঠেকাতে আগাম সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে প্যারাসিট্যামল খাচ্ছেন, গরুকেও খাওয়াচ্ছেন। 

একজন রাখাল ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এখনো ঈদের এক সপ্তাহ বাকি। গরুগুলা যদি ঠান্ডা লেগে পড়ে, তাহলে কে কিনবে? তাই আগেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

H2

মেডিকেল টিম নেই, বাড়ছে উদ্বেগ

হাট ঘুরে দেখা গেছে, সেখানকার পরিবেশ তুলনামূলক ভালো হলেও কাদা-পানি জমে আছে বিভিন্ন জায়গায়। পশুদের বিশ্রামের জায়গাও সীমিত। খামারী ও বিক্রেতারা বলছেন, এখানে মেডিকেল সেবা নেই বললেই চলে। গরুর যদি চিকিৎসা প্রয়োজন হয়, তাহলে দুশ্চিন্তায় পড়ে যেতে হবে।

ব্যাপারী সিরাজ হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘হাটের অবস্থান ভালো, তবে এত গরু-মানুষ এখানে জমছে— একটা মেডিকেল টিম থাকা দরকার। আমরা নিজেরাই ব্যবস্থা নিচ্ছি, কিন্তু সরকারি সহযোগিতা দরকার।’

ইজারাদার যা বলছেন

তেজগাঁও পশু হাটের ইজারাদার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমাদেরকে সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, ৩ তারিখ থেকে বেচাবিক্রি শুরু হবে। তবে আগেই অনেকে চলে এসেছেন। তাই আমরাও আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। মেডিকেল টিম আজ (৩১ মে) থেকেই কাজ শুরু করেছে। ডাক্তারদের বড় একটি টিম ভিজিটও করে গেছে।’

তিনি আরও জানান, ‘গরু রাখার জন্য হাটে পর্যাপ্ত জায়গা রাখা হয়েছে এবং প্রতিদিন স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। তবে খামারীদের অভিযোগ, শুরুতে কোনো চিকিৎসা সহায়তা ছিল না— যার ফলে অনেকেই নিজের খরচে ওষুধ সংগ্রহ করছেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের উৎপাদন দফতরের উপ-পরিচালক এ বি এম সালাহউদ্দীন বলেন, ‘বৃষ্টির সময় পশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অস্থায়ী হাটে গরু অসুস্থ হলে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে হাটে স্বাস্থ্যসেবা টিমের সহযোগিতা নিতে হবে।’

এমআই/এএইচ