images

জাতীয়

জলাবদ্ধতা ও যানজটে সীমাহীন দুর্ভোগে রাজধানীবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০ মে ২০২৫, ০৬:২৩ এএম

রাজধানী ঢাকায় বৃহস্পতিবার ভোর থেকে একটানা বৃষ্টি শুরু হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থেমে চলা এই বৃষ্টিতে পুরো শহর একপ্রকার স্থবির হয়ে পড়ে। বৃষ্টির কারণে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে করে সাধারণ মানুষের চলাচলে দেখা দেয় চরম দুর্ভোগ।

নিচু এলাকায় পানি ঢুকে পড়ে অনেক বাসাবাড়িতেও। অনেকে বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি। কেউ কেউ হাঁটু পানি ভেঙে রাস্তায় বের হন জরুরি প্রয়োজনে। অন্যদিকে, পানিতে ডুবে থাকা সড়কগুলোতে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। এতে কর্মজীবী মানুষ থেকে শুরু করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী—সবার দিন কাটে চরম দুর্ভোগে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ বৃহস্পতিবার ভোরে নিম্নচাপে পরিণত হয়। এর প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয়। আবহাওয়াবিদদের মতে, এই বৃষ্টি শুক্রবার পর্যন্ত চলতে পারে। তবে শনিবার থেকে বৃষ্টির প্রবণতা কিছুটা কমে আসবে।

রাজধানীর বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে সকাল থেকেই। মগবাজার, মৌচাক, মালিবাগ, শান্তিনগর, শাহজাহানপুর, রাজারবাগ, কাজীপাড়া, শ্যাওড়পাড়া, মিরপুর, বাসাবো, বিমানবন্দর সড়কসহ অনেক প্রধান সড়কেই হাঁটুপানি জমে যায়। ফলে সাধারণ মানুষকে জুতা হাতে নিয়ে পানি পেরোতে দেখা যায়। সরু রাস্তা বা গলিগুলোতে অবস্থা ছিল আরও করুণ।

নিউ ইস্কাটনের বাসিন্দা আকাশ আলী বলেন, বৃষ্টির কারণে আজ সারাদিন বাসা থেকে বের হতে পারিনি। বাসার নিচতলায় পানি উঠে গেছে। যারা বের হচ্ছেন, তারা হাঁটুপানি মাড়িয়ে যাচ্ছেন।

মিরপুর ১০-এর লাকি আক্তার জানান, সারাদিন বৃষ্টির মধ্যে ছিলাম। খাবার পানি ও বাচ্চার দুধ শেষ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে পানি ভেঙে বাইরে গিয়ে আনতে হয়েছে। আমার স্বামীও অফিস থেকে ফিরতে পুরোপুরি ভিজে গেছে।

জলাবদ্ধতার প্রভাবে যানজটের দুর্ভোগও ভয়াবহ রূপ নেয়। বিশেষ করে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে তীব্র যানজট দেখা যায়। বাংলামটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মতিঝিল, যাত্রাবাড়ি, গুলিস্তান, পল্টন, কাকরাইল, খিলগাঁও, মালিবাগ, মিরপুর, রামপুরা, বনশ্রী, বাড্ডা ও বিশ্বরোড এলাকা ছিল যানজটে অচল।

মিরপুরের শাহিনুল ইসলাম বলেন, আজ বাসে বাংলামটর থেকে মিরপুর ১১ আসতে দুই ঘণ্টারও বেশি লেগেছে। ভিজে ভিজে আসতে হয়েছে। শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে কি না বুঝতে পারছি না।

অন্যদিকে, পারভেজ রনি বলেন, সকালবেলা অফিস যেতে খুব একটা কষ্ট হয়নি। কিন্তু ফিরতি পথে যানজট আর জলাবদ্ধতায় ভয়াবহ অবস্থা। যেই এলাকায় থাকি, সেখানে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। আজ তো হাঁটুপানি।

নগরবাসীর অভিযোগ, এ ধরনের দুর্ভোগের মূল কারণ হচ্ছে ঢাকার দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা। তারা মনে করছেন, জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, বৃষ্টি কমে গেলে অনেক জায়গার পানি স্বাভাবিকভাবেই সরে যাবে। তবে যেসব এলাকায় নিয়মিত জলাবদ্ধতা দেখা যায়, সেসব জায়গায় সিটি করপোরেশন কাজ করছে।

এমআই/এইউ