images

জাতীয়

জুন থেকে ঢাকার খাল-মাঠ উদ্ধারে শুরু হবে ‘মহাকর্মযজ্ঞ’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

১৫ মে ২০২৫, ০৯:৩৭ এএম

আগামী জুন থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন দখল হয়ে যাওয়া খাল, লেক, মাঠ উদ্ধারে মহাকর্মযজ্ঞ শুরু হবে। খাল পাড়, মাঠে লাগানো হবে প্রচুর পরিমাণে গাছ। এমন উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

বুধবার (১৪মে) সন্ধ্যায় নগর ভবনে এক অনুষ্ঠানে সিটি করপোরেশনের এমন পরিকল্পনার কথা জানান।

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ১ জুন থেকে ম্যাসিভ আকারে কাজ শুরু হচ্ছে। প্রতিটি খাল, লেক, উন্মুক্ত স্থান, মাঠে ম্যাসিভ আকারে কাজ হবে। 

‘খাল বাঁচলে, বাঁচাবে নগর – প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উত্তম চর্চার প্রসার’ শীর্ষক একটি অভিজ্ঞতা বিনিময় সভার আয়োজন করে রেড অরেঞ্জ, সিএসআইআরএস- ইউআইইউ।

প্লাস্টিক ফ্রি রিভারস এন্ড সীস ফর সাউথ এশিয়া প্রকল্প–এর আওতায় কল্যাণপুর খাল এলাকায় বাস্তবায়িত একটি পাইলট প্রকল্পের অভিজ্ঞতা ও ফলাফল তুলে ধরতে এ আয়োজন করা হয়। যা ঢাকার নগর জলাশয় পুনরুদ্ধার এবং প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদ্ভাবনী কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে তৈরি।

অনুষ্ঠানে খাল পরিষ্কারে শিক্ষার্থীদের কাজে লাগানোর পরামর্শ আসে। 

উত্তরের প্রশাসক ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন ও টেকসই নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্ভাবনী উদ্যোগগুলোর পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, পূর্বে খাল পরিষ্কারে ১০০ কোটি টাকার ওপর খরচ হয়েছে। এখন আমরা ১০০ কিলোমিটারের ওপর খাল পরিষ্কার করেছি ১০ কোটি টাকারও কমে। এগুলো হলো পরিবর্তন। অনেক খাল পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। সাসটেইনেবলের ক্ষেত্রে রেড অরেঞ্জ লিমিটেডের মাধ্যমে স্কুলগুলো যদি অংশ নেয় তাহলে দ্রুত পরিবর্তন সম্ভব। 

বক্তারা বলেন,  নগরের প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কার্যকর সমাধান ভাগাভাগি করে নেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে রেড অরেঞ্জ। শিক্ষাথীদের দিয়ে খাল পরিষ্কার করালে খাল বাঁচানো সম্ভব হবে। 

তারা ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রমের সম্প্রসারণ এবং টেকসই ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সেরা চর্চা প্রসারের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)র প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. মাহবুবুর রহমান তালুকদার, নেদারল্যান্ডস দূতাবাস বাংলাদেশের সিনিয়র উপদেষ্টা ড. শিবলী সাদিক এবং  ইউএনওপিএস এআর, স্যামকো, বাংলাদেশর পার্টনারশিপ এডভাইজার শিরীন সুলতানা। 

শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এবিএম শামসুল আলম এবং স্বাগত বক্তব্য দেন রেড অরেঞ্জ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অর্ণব চক্রবর্তী। 

অর্ণব চক্রবর্তী বলেন, এটা একটা পাইলট উদ্যোগ। এর মাধ্যমে আমরা একটা মডেল দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে গাইডেন্স পেয়েছি। এটা আমাদের জন্য একটা বিশাল পাওয়া। 

মো. মাহবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, ৩ হাজার ২০০ টন বর্জ্য আমরা সংগ্রহ করি। এর মধ্যে ২০ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য রয়েছে। এর  মধ্যে ৫ শতাংশ মাইক্রো গ্রাম প্লাস্টিক বর্জ্য আছে। যা আমরা সংগ্রহ করতে পারছি। এর ওপরের স্তর নিয়ে স্টাডি বা রিসাইকলে বেশি সময় দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ৫ শতাংশ মাইক্রো গ্রামে পলি ব্যাগ, একবার ব্যবহারিত প্লাস্টিক রয়েছে। এ নিয়ে আমাদের বিশ্লেষণ খুব কম করা হয়েছে। ২০ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্যের মধ্যে ৭০ শতাংশ একবার ব্যবহারিত প্লাস্টিক রয়েছে। রিসাইকল প্রজেক্টটা সাসটেইনেবল করা যায়। সরকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে। 

ড. শিবলী সাদিক বলেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার, জনগণ, সিভিল সোসাইটি, নলেজ ইনস্টিটিউট এবং প্রাইভেট সেক্টর যৌথভাবে গুরুত্ব সহকারে কাজ করতে হবে। 

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন বলেন, বৃষ্টির পানি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নদীতে, সাগরে যেতে পারছে না। এর কারণ আমাদের ড্রেনের পানি খালের মাধ্যমে নদীতে যেতে পারছে না। যার কারণে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। ঢাকা মহানগরের লোকজন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। খালকে বাঁচাতে পারলে ঢাকা মহানগর রক্ষা করতে পারব। ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার ড্রেন সিস্টেম রয়েছে। খালের প্রবাহ ৮৬ কিলোমিটার। সবাই প্লাস্টিক, আবর্জনা ঝাড়ু দিয়ে ড্রেনে ফেলছে। বৃষ্টির পানি এর কারণে ড্রেনে যেতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই ড্রেনের পানি খালে যাচ্ছে। খালের ওপরে প্লাস্টিক আর নিচে পয়ঃবর্জ্য। 

সভাপতির বক্তব্যে আবু সায়েদ মো. কামরুজ্জামান অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে আলোচনা শেষে একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, লিপস্টিক, পাউডারের খোল মাইক্রো প্লাস্টিক। এটা যেন খালে না আসে।

বিইউ