জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
১৪ মে ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম
আগামী ২০৩০-২০৩২ সালের মধ্যে দেশের প্রায় ১৫০টি পৌরসভায় ইন্ট্রিগেটেড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ শেষ হবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পরিকল্পনা) এহেতেশামুল রাসেল খান।
বুধবার (১৪ মে) রাজধানীতে ‘বাংলাদেশ কান্ট্রি বিজনেস প্ল্যান ২০২৫-২০৩০’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।
এহেতেশামুল রাসেল বলেন, ‘আমরা কনভেনশনাল পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন সুবিধা দিয়ে থাকি। শুধু সরকারি সহায়তা এবং ভেলপমেন্ট পার্টনারদের যে সহায়তা তাতে ৩৬০০ রুরাল এলাকায় যারা কমিউনিটি আছে, ইউজার আছে, তাদেরকে সার্ভিস দিয়ে আসছি। আমরা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে পূর্বাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট করে তাদের কাছে হস্তান্তর করে আসছি। এই ইনফো স্ট্রাকচারগুলো অপারেশন মেইনটেন্সের দায়িত্ব ইউজারদের। যারা পৌর এলাকায় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ এবং রুরালে যারা সরাসরি এই সুবিধা ভোগ করে, সেই কমিউনিটি এই অপারেশন মেইনটেইনেন্সের দায়িত্ব পালন করে।’
তিনি বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর শুধু ইনফো স্ট্রাকচার ডেভলপ করে এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়ে থাকে। কিন্তু বাস্তবে আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি, শুধু ইনফো স্ট্রাকচার ডেভলপ একটি সমস্যা সমাধান করার জন্য উপযুক্ত না। এখানে অপারেশন মেইনটেনেন্স এবং সোশ্যাল মোবিলাইজেশন ক্যাপাসিটি বিল্ডআপ বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেটা আসলে আমাদের সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে সেই ক্যাপাসিটি, জনবল বা অন্যান্য ইনফো স্ট্রাকচারের অভাব রয়েছে।’
এই প্রকৌশলী আরও বলেন, ‘আমরা খুবই সৌভাগ্যবান যে, বিভিন্ন ডেভলপমেন্ট পার্টনারদের সহযোগিতায় যারা বাংলাদেশে কাজ করে, তারা এই বিষয়টা অনুধাবন করতে পেরেছে যে, শুধু ইনফো স্ট্রাকচার ডেভলপমেন্টটি এই সেক্টরের জন্য যথেষ্ট না। তাই তারা ক্যাপাসিটি বিল্ডআপ এবং সোশ্যাল মোবিলাইজেশনের উপরেও বিশেষভাবে কাজ শুরু করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘অনেকগুলো ডেভলপমেন্ট পার্টনার আমাদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন। ইতোমধ্যে আমরা ৫০টি পৌরসভায় এই ইন্ট্রিগেটেড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ শুরু করেছি। যেগুলো আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ হবে। তাছাড়া প্রায় ৮০টির মতো পৌরসভায় আমাদের এই এক্টিভিটিস শুরু হবে। আমরা আশা করি, ২০৩০ বা ২০৩২ সালের মধ্যে আমরা প্রায় ১৫০টি পৌরসভায় এই ইন্ট্রিগেটেড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ শেষ করতে পারবো। এই কাজগুলো শেষ হলে অনেকগুলো সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
প্রসঙ্গত, দেশের বিভিন্ন শহরে নিম্ন আয়ভিত্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য পানি, পয়ঃনিষ্কাশনসহ স্বাস্থ্যবিধি পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা ওসাপ বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ওসাপ বাংলাদেশ ২০০৭ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন শহরের নিম্ন আয়ভিত্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, স্বাস্থ্যবিধি এবং আচরণ পরিবর্তনের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। সংস্থাটি ইতোমধ্যে ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, রংপুরসহ ৩২টি পৌরসভায় কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এবং বর্তমানে আরও কয়েকটি সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় পানি, স্যানিটেশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও হাইজিন সম্পর্কিত কাজ করছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্মাশিয়াল ম্যানেজার কাজী শহিদুল ইসলাম এবং কোকা-কোলা কোম্পানির কান্ট্রি হেড (ডিরেক্টর) মমশাদ আলী খান।
এছাড়া ওসাপের লন্ডন অফিস প্রতিনিধি জেরেমি হর্নার ও আনজো ফ্রান্সিস এবং বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার উত্তম কুমার সাহা উপস্থিত ছিলেন।
বিইউ/এএইচ