নিজস্ব প্রতিবেদক
১২ মে ২০২৫, ০৮:১৭ পিএম
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম এবার আইনের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করল অন্তর্বর্তী সরকার। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। গণহত্যায় অভিযুক্ত দলটির বিরুদ্ধে সরকার হার্ডলাইনে থাকবে। কোনোভাবেই দলটি যেন সংগঠিত হতে না পারে সে ব্যাপারে সরকার সতর্ক থাকবে। কেউ সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার (১২ মে) বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এই কথা বলেন। এর আগে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির নবম সভায় সভাপতিত্ব করেন।
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন ইতোমধ্যে জারি হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রজ্ঞাপনে যে ধরনের নির্দেশনা আছে আমরা সেভাবেই কাজ করব। এ বিষয়ে সেদিন (শনিবার) বিস্তারিত বলে দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
আওয়ামী লীগকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আইন যেটা হয়েছে সেটা বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব আমাদের।
আওয়ামী লীগ ঝটিকা মিছিল বা কোথাও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করলে তাদের কীভাবে ঠেকানো হবে সেটা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আগে জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব। আর গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যদি আমরা জানতে পারি তাহলেও আমরা ব্যবস্থা নেব।
বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে আছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ছবি: সংগৃহীত
গত শনিবার (১০ মে) রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা হারান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। পালিয়ে যান ভারতে। এরপর থেকে দলটি কার্যত অস্তিত্বহীন। ছন্নছাড়া অবস্থায় রয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। নেতাদের অনেকেই বিদেশে পালিয়ে গেছেন, কেউ কেউ গ্রেফতার হয়েছেন। বেশির ভাগ নেতা দেশে গা ঢাকা দিয়ে আছেন। লাখো কর্মী প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বলে পরিচয় দেওয়ার মতো পরিস্থিতিও নেই তাদের। এই অবস্থায় দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় নতুন করে আরও চাপে পড়ল আওয়ামী লীগ।
জেবি