জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৫৪ পিএম
রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাঁটা যায় না- এমন মন্তব্য করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ ওই স্থান থেকে অবৈধ হকার উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪নং ওয়ার্ডের পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ কাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কে যত হকার ও অটোরিকশা আছে সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এই ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন তাদের পুনর্বাসনের জন্য আমরা প্লাটফর্ম করব। তাদের জন্য আমরা বিকল্প ব্যবস্থা করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসঙ্গে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে।
এসময় তিনি জানান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে; এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণসামগ্রী কি সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।
এসময় তিনি উল্লেখ করেন, আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে পূর্ব ঢাকায় ৪২নং ওয়ার্ডের চলমান কাজ পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে কী ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা একটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে কি নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে; তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে জনগণ ততবেশি জবাবদিহি করতে পারবে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের জন্য আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি সঠিক নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে এটা ঠিক করে দেবে।
তিনি আরও বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নিবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নিবেন। আমরা চাই সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সাথে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে এবং বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথেও যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন।
বিইউ/এফএ