জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৪ পিএম
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বর্তমান যুদ্ধাবস্থা বাংলাদেশের জন্য শুভ লক্ষণ নয় বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো এবং বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা সরাসরি বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য বড় ধরনের হুমকি না হলেও তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের বিষয়। কারণ, পরমাণু শক্তিধর এই দুই দেশের সংঘাত কেবল তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নাও থাকতে পারে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) এক মিলনায়তনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে অনুষ্ঠিত শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে সার্ক কার্যকরভাবে সক্রিয় নয়; অথচ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সার্কের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন। এই প্রেক্ষাপটে ভারত-পাকিস্তানের নতুন উত্তেজনা উদ্বেগজনক। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, অতীতের মতো এবারও আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসন সম্ভব হবে।
অর্থনীতিতে এই উত্তেজনার সম্ভাব্য প্রভাব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি করে, যদিও রফতানির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। ভারতের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকায় রফতানির পরিমাণ একসময় এক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে ৪০ বছর লেগেছিল, কিন্তু পরবর্তী ৭ বছরের মধ্যেই তা বেড়ে দুই বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বর্তমানে যদি ভারত সামরিক ব্যয়ের দিকে বেশি মনোযোগী হয়, তবে তাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রভাব পড়তে পারে; যা বাংলাদেশের রফতানিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিনিয়োগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি শুধু মুখের কথা নয়; বাস্তবে বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেন, দেশে যদি কোনো কারণে নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়, তাহলে তা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে।
‘সাম্প্রতিক বিনিয়োগ সম্মেলন বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে’ শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকা ইডেন মহিলা কলেজের দল জয়ী হয়। সরকারি দলের ভূমিকায় অংশগ্রহণ করে ঢাকা কলেজের দল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
টিএই/এফএ