নিজস্ব প্রতিবেদক
০২ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম
ঈদের আনন্দ উদযাপনে গত দুই দিনেই চার লাখেরও বেশি দর্শনার্থী রাজধানীর জাতীয় চিড়িয়াখানায় ভ্রমণে গিয়েছেন। তবে, ঈদের উৎসবের প্রস্তুতি সত্ত্বেও চিড়িয়াখানার প্রবেশ পথের ট্রাফিক সিস্টেমের অবস্থা খুবই খারাপ। কমার্স কলেজ মোড় থেকে চিড়িয়াখানা মূল ফটক পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, যার কারণে ভাড়া বেড়ে গেছে দ্বিগুণ। যদিও দর্শনার্থীরা এই অবস্থার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
ঈদ উপলক্ষে পরিবার-পরিজন নিয়ে পর্যটন স্পটগুলোতে ভিড় বাড়েছে, কিন্তু প্রতিবছরের মতো এবারও যানজটের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঈদের প্রথম দিন ও দ্বিতীয় দিন চিড়িয়াখানা এবং আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চিড়িয়াখানার সামনে সড়কের দু’পাশে অবৈধ গাড়ি পার্কিং করা হয়েছে, ফলে চলাচলের রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে গেছে। এ কারণে দর্শনার্থীরা এক-দেড় কিলোমিটার রাস্তা ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন, অথচ রাজধানীর অন্য সড়কগুলো একেবারে ফাঁকা।
শুধু যানজট নয়, কিছু জায়গায় প্রশাসনের সামনে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। কমার্স কলেজ মোড় থেকে চিড়িয়াখানা পর্যন্ত আটজন ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে থাকার কথা, কিন্তু বাস্তবে মাত্র দুইজন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
ঈদের দুর্ভোগ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে আশরাফুল আলম নামের এক দর্শনার্থী বলেন, ‘এবার দ্বিতীয়বার চিড়িয়াখানায় আসলাম। গত বছরও এই একই সমস্যা ছিল। গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে এই যানজট তৈরি হচ্ছে।’
আরেক দর্শনার্থী কবির হোসেন বলেন, ‘চিড়িয়াখানা থেকে কমার্স কলেজ মোড়ে আসতে রিকশায় ভাড়া ১০০ টাকা, বাসে ৬০ টাকা চাচ্ছে, অথচ অন্য সময় ২০ টাকায় আসা যায়। ঈদের আনন্দকে ভোগান্তিতে পরিণত করেছে তারা।’
এদিকে, কমার্স কলেজ মোড় থেকে চিড়িয়াখানা পর্যন্ত দুই জায়গায় কিছু লোককে ট্রাফিক পুলিশ সেজে লাঠি হাতে কাজ করতে দেখা গেছে। এছাড়া, রিকশা থেকে ১০-২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করতেও তারা জড়িত ছিল।
চিড়িয়াখানার সামনে পোশাক পরা ট্রাফিক পুলিশের একজন সদস্য জানান, ‘এখানে মোট আটজন দায়িত্বে আছেন। তবে রাস্তায় যে ১০-২০ টাকা নিচ্ছে, তারা অন্যরা। এরা আগে থেকেই নিচ্ছে। এই টাকা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষই আদায় করে।’
এদিকে, মোজাফফর হোসেন নামের এক চার্জার রিকশাচালক বলেন, ‘ঈদের দিন থেকেই এই রুটে গাড়ি চালাচ্ছি। কখনো গাড়ি পার্কিং করি না, তবে গাড়ি ঘুরানোর সময় ২০ টাকা দিতে হয়। সবাই তো দিচ্ছে, তাই আমিও দিয়েছি।’
জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার ঢাকা মেইলকে জানান, ‘ঈদের সময়ে আমাদের এখানে দর্শনার্থীর সংখ্যা ১০ গুণ বেড়ে যায়। আমরা চেষ্টা করি তাদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত মিটিংও হয়, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে এই সমস্যা সমাধান করতে।’
এইউ