১৮ মার্চ ২০২৫, ০৪:৩০ পিএম
১৯৮৫ সাল থেকে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল পরিচালনার জন্য সরকারি সংস্থা হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি বা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
কিন্তু গত বছরের ৫ আগস্ট হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত এপিবিএন ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব ছেড়ে চলে যাওয়ার পর বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কাজ পরিচালনা করতে শুরু করে বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের সদস্যরা।
এর আগে, এই কাজের জন্য বেবিচকের এভসেক (এভিয়েশন সিকিউরিটি) ফোর্স ছিল। বর্তমানে, এভসেক ফোর্সের পাশাপাশি বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের সদস্যরা কাজ করছেন, যা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স নামে বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নতুন বাহিনী গঠনের খবর ছড়িয়ে পড়লে বেবিচক কর্মীরা রোববার রাত থেকেই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেন।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে তারা বেবিচক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং মুহূর্তের মধ্যে কার্যালয়ে ঢুকে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার দাবি জানান।
একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা সদর দপ্তর থেকে মিছিল নিয়ে মূল সড়কে চলে যান। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক প্রায় আধাঘণ্টা অবরোধ করলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়াসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে তাদের শান্ত করে ফিরিয়ে নিয়ে যান।
আন্দোলনকারী কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, বিমানবন্দরকে নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স গঠনের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, যা তারা জানতেন না। তাদের মতে, এভসেক ফোর্সকে নিষ্ক্রিয় করার জন্যই এই ষড়যন্ত্র।
কিন্তু কর্মচারীদের বিক্ষোভের বিষয়বস্তুর নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
বেবিচকের জনসংযোগ কর্মকর্তা কাওছার মাহমুদের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্প্রতি বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে একটি নতুন বাহিনী গঠনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
এ ধরনের কোনও প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়নি এবং বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই।
বেবিচক জানায়, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঘিরে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছে।
কর্তৃপক্ষের মতে, এভিয়েশন খাতের উন্নয়ন ও যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে যেকোনও সিদ্ধান্ত পেশাদারত্বের সঙ্গে যাচাই-বাছাই করেই নেওয়া হয়।
কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, তারা জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে বদ্ধপরিকর এবং এভিয়েশন খাতের বিকাশে সব বাধা উপেক্ষা করে নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।
বেবিচক জানায়, বিমানবন্দরের যাত্রীসেবার সার্বিক মান উন্নয়ন এবং মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রমিত প্রবিধানমালা প্রতিপালনের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান এভিয়েশন শিল্পের সার্বিক বিকাশ নিশ্চিত করতে বিমানবন্দরগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এভিয়েশন সিকিউরিটি বিভাগ, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, অঙ্গীভূত সাধারণ আনসার সদস্যসহ বিভিন্ন সংস্থা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনার জন্য নিরাপত্তা বিভাগ (এভসেক) এর ৩৪৯২ জনসহ সর্বমোট ৫১১২ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
--এমএমএস