নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫৬ পিএম
বিচার প্রক্রিয়া সহজ করতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞাসহ শাস্তির বিধানে বেশি কিছু সংশোধনী আনতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। সংশোধনী অনুযায়ী বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের ঘটনা আলাদা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। অন্যদিকে সম্মতি ব্যতিরেকে ধর্ষণের ঘটনার বিচার ও তদন্তের সময় কমানো হবে। এছাড়া শিশু ধর্ষণ মামলা দ্রুত বিচারের লক্ষ্যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে।
সোমবার (১৭ মার্চ) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ ব্যাপারে জানান আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
এর আগে আজ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এক বিশেষ সভায় শিশু ধর্ষণ মামলার দ্রুত বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনসহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০২০ এর সংশোধনীর ব্যাপারে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। আগামী বৃহস্পতিবার আইনটি সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করা হবে।
ব্রিফিংয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনীর ব্যাপারে কিছু মতামত পাওয়া গেছে। এগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করব। এরপর আগামী বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এটি আনুমোদন পাবে বলে আশা করছি।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনীর ব্যাপারে বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে দেখা যায়- মামলার জট লেগে থাকে। কারণ এখানে দুই ধরনের মামলা আসে। এসবের একটা হচ্ছে সম্মতি সাপেক্ষে ধর্ষণের ঘটনা। এ ধরনের মামলা বেশি আসে। এখন থেকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের ঘটনা আলাদা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে, যাতে বিচার প্রক্রিয়া সহজ করা যায়। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে সম্মতি ব্যতিরেকে ধর্ষণ, সেটার বিচার ও তদন্তের সময় কমানো হয়েছে। এছাড়া কেবল পুরুষ কর্তৃক না যেকোনো ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণের ঘটনা ধর্ষণের মামলা হিসেবে গণ্য হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি জানান, ধর্ষণের সংজ্ঞায় বলাৎকারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শুধুমাত্র পেনিট্রেশন না, যদি অন্য কোনো বস্তু ব্যবহার করা হয় বা পায়ুপথে বা যেকোনভাবে ধর্ষণ করা হয়, সেটাও ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
এই আইন সংশোধনীর ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই মেডিকেল সার্টিফিকেট এবং পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে যদি বিচার করা সম্ভব হয়, তাহলে আদালত ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই বিচার কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। এই সংশোধনী আনার ব্যাপারেও সবাই নীতিগতভাবে একমত হয়েছে।
খসড়া আইন অনুযায়ী, ধর্ষণের মামলা তদন্তের সময় ৩০ দিন থেকে কমিয়ে ১৫ দিন এবং মামলার বিচার কাজ শেষ হওয়ার সময় ১৮০ দিন থেকে কমিয়ে ৯০ দিন করা হচ্ছে।
ভিকটিমের সুরক্ষা দিতে নানা ধরনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, মাগুরার ওই শিশু ধর্ষণের মামলা চলছে নিজস্ব গতিতে এবং দ্রুততার সঙ্গে এর বিচার হবে। এই মামলার তদন্ত কাজ ২-৩ দিনের মধ্যে শেষ হবে উল্লেখ করে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, আগামী কয়েকদিনের মামলার বিচার কাজ শেষ হয়ে যাবে।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আরও দুটি ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে।
ইএ