নিজস্ব প্রতিবেদক
১৪ মার্চ ২০২৫, ০৫:১৯ পিএম
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা হ্রাস পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, সহায়তা কমানো এক ধরনের অপরাধ।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠককালে একথা বলেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিন সকাল ১০টা থেকে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে এক ঘণ্টার বৈঠক করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের সংস্কার অ্যাজেন্ডার প্রতি জাতিসংঘের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বিশ্বে ‘সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠীর’ মধ্যে অন্যতম রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, এই সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রতি আমি আমাদের সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করতে চাই। আমরা এখানে আপনার সংস্কারকে সমর্থন করতে এসেছি। আমরা আপনাদের সর্বোচ্চ সাফল্য কামনা করি। আমরা যা করতে পারি, আমাদের জানান।
তিনি আরও বলেন, মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসে তিনি মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করতেই এখানে এসেছেন। তিনি বলেন, আমি এমন জনগোষ্ঠী আগে কখনো দেখিনি, যারা এত বেশি বৈষম্যের শিকার। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ভুলে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সহায়তা কমানো এক ধরনের অপরাধ।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের ‘অপরিসীম কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেন গুতেরেস। তিনি বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রতি অত্যন্ত উদারতা দেখিয়েছে। রোহিঙ্গারা আমার কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে এক ঘণ্টার বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস আশা প্রকাশ করেন, এই সংস্কার প্রক্রিয়া অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং দেশের ‘প্রকৃত পরিবর্তন’ আনতে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, আমি জানি, সংস্কার প্রক্রিয়া কিছুটা জটিল হতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আপনার আসার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারত না। আপনার এই সফর শুধু রোহিঙ্গাদের জন্য নয়, বাংলাদেশের জন্যও সময়োপযোগী।
রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন এবং তাদের জন্য যথেষ্ট খাদ্য ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ মহাসচিবের সহায়তা চান অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের দুর্দশার বিষয়ে বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছি। বিশ্বকে জানতে হবে তারা কীভাবে কষ্ট পাচ্ছে। হতাশার একটি অনুভূতি কাজ করছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আশ্বাস দেন, তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবেন এবং তাদের জন্য সহায়তা সংগ্রহে অগ্রাধিকার দেবেন।
চার দিনের সফরে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় পৌঁছান জাতিসংঘ মহাসচিব। সফরের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে গেছেন তিনি।
ইএ