জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৫ এএম
অমর একুশের ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সব স্তরের মানুষের ঢল নামে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে শিশুরাও এসেছেন শহীদ মিনারে। কেউ বাবা-মায়ের হাত ধরে, আবার কেউ এসেছেন স্কুল শিক্ষকদের সাথে। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে অন্যরকম অনুভূতি দেখা গেছে তাদের মধ্যে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনেক শিশুকে এদিক সেদিক ছুটাছুটি করতে দেখা যায়। তাদের অনেক পরনে ছিল কালো পাঞ্জাবি-শাড়ি। কেউ আবার আঁকিয়ে নিচ্ছে আলপনা।
বাবা মায়ের সাথে শ্রদ্ধা জানাতে আসা শিশু তন্বী জানান, বাবা-মায়ের সঙ্গে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। অনেক ভালো লাগছে। গতবারেও এসেছিলাম।
আরেক শিশু রিয়াদ বলেন, ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত —তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। আমাদের সবার উচিত বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা।
শ্রদ্ধা জানাতে আসা এক শিশুর অভিভাবক বলেন, এখন থেকেই বাচ্চাদেরকে যদি না আমাদের সংস্কৃতি না শেখাই, তাহলে তারা ২১ ফেব্রুয়ারির ইতিহাস ভুলে যাবে। তাই বাচ্চাদেরকে নিয়ে এসেছি শ্রদ্ধা জানাতে।
এর আগে, অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি কিছুসময় নীরবে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও অন্যান্য বিচারকবৃন্দ। প্রধান বিচারপতির পর একসঙ্গে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাবৃন্দ। তারা শহীদ বেদী ত্যাগ করলে বাংলাদেশে নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক মিশনের সদস্যরা ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
একসঙ্গে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন তিন বাহিনী প্রধান। এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ, এম, এম, নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে অন্যান্য কমিশনারবৃন্দ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর ফুলেল শ্রদ্ধা জানান, আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার, আনসার মহাপরিচালক, ডিজিএফআই মহাপরিচালক, বিজিবি মহাপরিচালক, র্যাব মহাপরিচালক, এনএসআই মহাপরিচালক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও অমর একুশে উদযাপন কমিটির সদস্যরা শহীদ বেদীতে ফুল দেন। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ওই এলাকা ত্যাগ করলে সর্বস্তরের জনগণের জন্য শহীদ মিনার খুলে দেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও সাধারণ মানুষ পুষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের স্মরণ করেন।
টিএই/এমএইচটি